সভ্যতা বিকাশের প্রাচীন নিয়ামক ধর্ম। অথচ অধিকাংশ মানুষই সবচেয়ে অসচেতন এ বিষয়টি নিয়ে। জ্ঞানগম্যির আশির্বাদে হাজারো সমস্যার সমাধান হয়েছে। উত্তর বের হয়েছে পরমাণুর ভেতর থেকে গ্যালাক্সির বাইরের। অথচ অনুসারী এবং বিরোধীতাকারীরা সমানভাবেই অজ্ঞতা দেখিয়েছে ধর্মকে বুঝতে। অথচ ধর্ম যে ইতিহাসের গতি পরিবর্তন করে দিয়েছে, তার নজির অজস্র। ভারতের সাঁওতাল বিদ্রোহ থেকে আমেরিকার স্বাধীনতা আন্দোলন- ধর্মের ঘ্রাণ থেকে মুক্ত হতে পারেনি কেউই। ত্যাগ, উদারতা আর মানবতার গল্প যেমন আছে; অপব্যাখ্যা, ব্যবসা এবং হিংস্রতার উদাহরণও কম নেই। সব মিলিয়েই মানুষের ইতিহাসের সাথে সাথে গড়ে উঠেছে ঈশ্বরের ইতিহাস। আর এমন এক বিষয় নিয়েই লেখা বই “এ হিস্ট্রি অব গড”। লেখিকা ক্যারেন আর্মস্ট্রং-এর দীর্ঘকাল গবেষণায় আব্রাহামিক ধর্মগুলোর বিচিত্র গল্প। এ. এন. উইলসন বইটি সম্পর্কে দাবি করেছেন-
“ঈশ্বরের অনুসন্ধান মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিযাত্রা। আর ক্যারেন আর্মস্ট্রং-এর বইটি এই বিষয়ে সবচেয়ে চমৎকার এবং পাণ্ডিত্যপূর্ণ জরিপ”
১.
ধারণা করা হয়, আদিতে মানুষ একজন পরম উপাস্য বা Supreme deity-তে বিশ্বাস করতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন গুণে বিশেষায়িত দেবতাদের আধিপত্য তৈরি হয়। পরম ঈশ্বর বা High God প্রতিস্থাপিত হন নতুন উদ্ভূত ধারণার মাধ্যমে। উদাহরণ হিসাবে প্যালিওলিথিক যুগের কথাই সামনে আনা যেতে পারে। কৃষির উদ্ভব এবং বিস্তারের কারণে বিমূর্ত পরমেশ্বর বা High God এর চেয়ে ফসল ও উর্বরতার দেবী বা Great Mother অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। উর্বরতার প্রতীক হয় এক অন্তঃসত্ত্বা দেবীমূর্তি।
তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব আলোচনায় ক্যারেন আর্মস্ট্রং অন্যতম নাম। বিভিন্ন ধর্মের মূলকথা, মতবাদ, আচার আর বিশ্বাসের অধ্যয়ন নিয়ে গড়ে ওঠা এই শাস্ত্রে প্রতিফলিত হয় মানুষের অন্য এক পরিচয়। মুসলিম স্বর্ণযুগে ইবনে হাজম তুলনামূলক ধর্ম পাঠে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। সে হিসাবে তাকেই জনক দাবি করতে চান অনেকেই। আধুনিক ইউরোপে ম্যাক্স মুলার, এডওয়ার্ড বার্নেট টেইলর, জেমস জর্জ ফ্রেজার, এমিল ডুর্খেইম এবং মির্চা এলিয়াদ দিয়েছেন পরিণত রূপ। প্রথমদিকে কেবল প্রধান প্রধান ধর্মগুলো আলোচ্য বিষয় হলেও পরবর্তীতে যোগ হয়েছে প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের ছোট-বড় অনেক বিশ্বাস। উদ্ভাবিত হয়েছে নানা মতবাদ; রচিত হয়েছে গ্রন্থ। ক্যারেন আর্মস্ট্রং-এর ‘এ হিস্ট্রি অব গড’ বইটি সেই ধারাতেই নবতম সংযোজন।
১৯৪৪ সালের ১৪ই নভেম্বর আইরিশ ক্যাথোলিক পরিবারে জন্ম নেয়া ছিপছিপে মেয়েটির ধর্ম নিয়ে গবেষণায় আসার পেছনেও গল্প আছে। ১৮ বছর বয়সে ক্যাথোলিক চার্চের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ‘সোসাইটি অব দ্য হোলি চাইল্ড জেসাস’- এর সদস্য হন। দীর্ঘ সাত বছর সেখানে কাটিয়ে অক্সফোর্ডে আসেন ইংরেজি পড়তে। পরবর্তীকালে দেয়া ভাষ্যমতে, কোনোটাই তার জীবনে সুখকর ছিলো না। ব্রিটিশ টিভি চ্যানেলে সেন্ট পলকে নিয়ে ডকুমেন্টারি করার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের একত্ববাদী ধর্মগুলোর ব্যাপারে প্রচণ্ড আগ্রহী হয়ে ওঠেন ক্যারেন। তার লেখা ইসলাম: এ শর্ট হিস্ট্রি এবং মুহম্মদ (সা.): এ বায়োগ্রাফি অব দ্য প্রোফেট বই দুটি এখনো ইংরেজি ভাষাভাষীদের জন্য ইসলাম সম্পর্কে জানার অন্যতম দুয়ার।
‘এ হিস্ট্রি অব গড’ বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সালে। নাম ঈশ্বরের ইতিবৃত্ত হলেও বস্তুত আলোচনা করা হয়েছে ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং ইসলাম ধর্মের বিস্তার ও বিবর্তন নিয়ে। সময়ের সাথে সাথে সভ্যতা পরিণত হয়; সেই সাথে পরিণত হয় তাদের লালিত ধর্মচিন্তাও। প্রাচীন কানানীয় সংস্কৃতি ঘাটাঘাটি করলে খুঁজে পাওয়া যায় বা’আল, তিয়ামাত, ইয়া, আপসু, মারদুক প্রভৃতি দেবতার পদচিহ্ন। বিমূর্ত ঈশ্বরের আধিপত্যকে ছাপিয়ে গিয়ে একেক জনপদে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রাসঙ্গিক দেবতার অবস্থান। খ্রিষ্টপূর্ব বিশ শতকের মাঝামাঝি আব্রাহাম কানানে বসতি গড়েছিলেন। তিনি ছিলেন ‘এল’-এর উপাসক। বস্তুত, ক্যারেন আর্মস্ট্রং বাইবেলের বিভিন্ন সূত্র ঘেটে প্রমাণ করতে চাইছেন- পৃথক কয়েকটি নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীতে হিব্রু ঈশ্বর ‘ইয়াহওয়েহ’র অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিলো। গোষ্ঠীগুলো একত্রিত হয়ে একটি উম্মাহ গঠন করে ইয়াহওয়েহর প্রতি তাদের আনুগত্যের ভিত্তিতেই।
পুত্র ইসমাইল আর স্ত্রী হাজেরাকে নির্বাসনে পাঠানোর আগে আব্রাহাম; © , 1657–58
২.
খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দের দিকে আব্রাহামের বংশধর বলে দাবি করা গোত্রগুলো মিশর থেকে কানানে আসে। ইয়াহওয়েহ এর উপাসক মোজেস তাদেরকে দাসত্ব থেকে মুক্তি দান করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৭৪২ সালে সলোমনও ছিলেন তার প্রতি অনুগত। ইসায়াহ, ইযিকিয়েল, নেহেমিয়াহ প্রভৃতি নবীগণ ইহুদি ঈশ্বরের ধারণাকে অনেকাংশেই পরিণতি দান করেছেন। ধর্মের ইতিহাসে ইহুদিবাদের অন্যতম প্রধান সংযোজন চরম একত্ববাদ। যা আগের পারসিক জরাথুস্ত্রবাদ এবং মিশরে এখনাটনের চেয়ে অনেংকাশেই পরিণত।
খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে ব্যাপক বিস্তার লাভ করে ইহুদি ধর্ম। একদিকে আলেকজান্দ্রিয়ার জ্ঞানচর্চা আর অন্যদিকে প্লেটো ও এরিস্টটল পরবর্তী গ্রিসের চিন্তাধারা। দার্শনিক প্লটিনাসের The One এবং এরিস্টটলের Unmoved Mover তত্ত্বগুলো বিশেষ চিন্তার খোরাক যোগায় চিন্তাশীলদের জন্য। ঠিক এই সময়েই আবির্ভাব ঘটে খ্রিষ্টধর্মের। যীশুর জন্মরহস্য, আকস্মিক ক্রুশবিদ্ধ হওয়া এবং পুনরুত্থানের ধারণা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জন্ম নেয় ট্রিনিটি- পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মা। একত্ববাদের এক নতুন রূপ। ইহুদিবাদে ঈশ্বর যেখানে প্রতিশোধপরায়ণ; সেখানে খ্রিষ্টধর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালোবাসা।
বিশ্বমানবতার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই ক্যারেন আর্মস্ট্রং প্রতিষ্ঠা করেন ‘‘চার্টার ফর কমপেশন” নামের সংগঠন। ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির জন্য ইতোমধ্যেই ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং মুসলিম বিভিন্ন সংগঠন থেকেই সম্মাননা লাভ করেছেন। অতিথি হিসাবে থেকেছেন আন্তঃধর্মীয় আলোচনাগুলোতেও। ওয়াশিংটন পোস্ট তার সম্পর্কে দাবি করেছে, “স্পষ্ট এবং পাণ্ডিত্যপূর্ণ ধর্মের ঐতিহাসিক”। বইটির ভূমিকাতে লেখিকার কথাতেই স্পষ্ট বিষয়টি-
“একত্ববাদী ধর্মগুলো ভাষার ব্যাপারটাতে গুরুত্ব দেয়। একইসাথে পরম সত্যকে প্রকাশের জন্য ভাষা যথেষ্ট হতে পারে না বলেই তারা মনে করে। ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং মুসলমানদের সৃষ্টিকর্তা কথা বলেন; আর সেই কথাগুলো বিশ্বাসীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ঈশ্বরের কথাগুলো আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে বারবার গঠন করেছে। আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ঈশ্বর আজকের দিনে কী তাৎপর্য বহন করবে।”
৬১০ সালে মুসলমানদের নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিস্ময়কর দ্রুততার সাথে আরবরা প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যে বিজয়ের পতাকা হাতে প্রবেশ করলো। খোলাফায়ে রাশেদিনের আমলে (৬৩২-৬৬১ সাল) ভিত্তি স্থাপিত হলেও পরবর্তীকালে সিরিয়াকেন্দ্রিক উমাইয়া শাসন (৬৬১-৭৫০ সাল) এবং বাগদাদকেন্দ্রিক আব্বাসীয় শাসনে (৭৫০-১২৫৮ সাল) ইসলাম আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসাবে ভূমিকা পালন করে। বিশ্বাসের ভিতে লাগে নতুন স্রোত। মানুষ তার সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে নতুনভাবে আবিষ্কার করে ইসলামের পতাকার নিচে। অন্যান্য ধর্মের মতো ইসলামকেও ব্যাখ্যা করা যায় নানাভাবে। এ কারণে ইহুদিদের মধ্যকার হাসিদিক এবং মেসিয়ানিকের মতো; খ্রিষ্টধর্মের ক্যাথোলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট-এর মতো মুসলিমরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে শিয়া এবং সুন্নিতে।
নবম শতকের দিকে ধর্মের যাত্রায় দর্শন এক নতুন মাত্রা যোগ করে। গ্রিকদর্শন ইতোমধ্যে খ্রিষ্টিয় চিন্তায় প্রভাব ফেলেছে; বিশেষ করে এরিস্টটল এবং নিওপ্লেটোনিস্টদের মতবাদগুলো। মুসলিম বিশ্বে আল-ফারাবি, ইবনে সিনা, ইমাম গাজ্জালি এবং ইবনে রুশদের মতো দার্শনিকরা চিন্তাগুলো সমন্বয়ের প্রচেষ্টা চালান; যা পশ্চিমে মাইমোনাইডস, টমাস একুইনাস এবং আলবার্ট দ্য গ্রেটকেও প্রভাবিত করে। প্লেটো আর এরিস্টটলের ঈশ্বর ধারণা আরবদের স্পর্শে শুধু ঈশ্বর হয়েই থাকেনি। আত্মপ্রকাশ করেছে ধর্মের দার্শনিক ভিত্তি হিসেবে।
৩.
১০টি পৃথক অধ্যায়ে বিভক্ত বইটি। ক্যারেন আর্মস্ট্রং ফলত ধর্মের বাইরের আচার লক্ষ্য করেননি; লক্ষ্য করেছেন সময়ের সাথে সাথে ধর্ম কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে। নতুন পরিস্থিতির মোকাবেলায় কীভাবে অবচেতনেই বিবর্তিত হচ্ছে বিশ্বাসের ভিত্তি। এজন্য বাদ যায়নি অতীন্দ্রিয়বাদীরাও। ইহুদি, খ্রিষ্টধর্ম এবং ইসলামের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার যুগে ভালো জনপ্রিয়তা পায় মিস্টিসিজম। আত্তার, রুমি, সোহরাওয়ার্দী, শামস্ তাবরিজ কিংবা মানসুর হাল্লাজদের মতো মুসলিম সুফিদের আবির্ভাব যেমন ঘটেছে; পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্ব দেখেছে মেইস্টার একহার্ট, জোহান্স টাওলার, হেনরি সুসো এবং ডেম জুলিয়ানের মতো মুখ। ঈশ্বর এবার যেন প্রেমিক হিসাবেই বেশি মুখ্য।
ঈশ্বরবাদীদের জন্য চরম সিদ্ধান্তমূলক ছিলো পঞ্চদশ এবং ষোড়শ শতাব্দী। মুসলমান আর ইহুদিদের সরিয়ে গোটা ইউরোপের নায়ক তখন খ্রিষ্টধর্ম; বিশেষ করে ক্যাথলিক চার্চ। ধর্মীয় প্রধানদের স্বেচ্ছাচারে ততক্ষণে অনেকটাই ক্লান্ত মানুষ। একদিকে হতাশা এবং আতঙ্ক আর অন্যদিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর নতুন সমাজব্যবস্থায় ঈশ্বর যেন পরিণত হলেন তৃতীয় ব্যক্তিতে। অবশ্য রেনেসাঁ পরবর্তী পরিণত মানুষেরা নতুনভাবে দেখতে শিখেছে বললেই বোধহয় ঠিক হবে। তার প্রমাণ দিতেই আসলেন স্পিনোজা, দেকার্ত, হেগেলের মতো যুক্তিনিষ্ঠ দার্শনিকগণ। ঈশ্বরকে ব্যাখ্যা করা হলো নতুন আলোয়।
উনিশ শতকে একটা অন্যরকম গল্প শুরু হয়। নাস্তিকতা একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়; কিছুদিন আগেও যা ছিলো অনেকটা দুর্লভ। বস্তুবাদের তোপে বেশ ভালোই ভুগে চলেছে ভাববাদ। ডারউইনের জীববিবর্তন, কার্ল মার্ক্সের সমাজ বিবর্তন এবং সিগমুন্ড ফ্রয়েডের মনোঃসমীক্ষণ মানুষের চিন্তায় এনে দিয়েছে বিপ্লব। সেই ঝড় শেষ না হতেই হাল আমলে ফের বদল ঘটতে শুরু করেছে দৃশ্যপট। অনেক দেশেই ধর্মগুলো ফের মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। একদিকে মৌলবাদের কারণে হচ্ছে সমালোচিত, অন্যদিকে বেড়ে যাচ্ছে ধর্মপ্রিয়তাও। মানুষের বিশ্বাস এবার কোন পথে হাঁটবে?
৪.
বইটি নিউ ইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার হয়। লেখিকার অন্যান্য জনপ্রিয় গ্রন্থগুলোর মধ্যে আছে ‘A Short History of Myth’, Muhammad: Biography of A Prophet, The Bible: A Biography, Buddha, Islam: A Short History, The Battle for God: Fundamentalism in Judaism, Christianity and Islam, The Great Transformation: The Beginning of Our Religious Traditions প্রভৃতি। বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে কাজ করলেও তার দৃষ্টি থাকে মূলত ধর্মের উদারতা আর তাদের মধ্যকার সাদৃশ্য অনুসন্ধানের দিকে।
ধর্মগুলোকে যথাযথভাবে অধ্যয়ন করার মাধ্যমেই কেবল ধর্মাশ্রয়ী অপরাধ দূর করা সম্ভব; © thevermilion.com
সন্দেহ নেই, ‘A History of God’ বইটি লেখিকার দীর্ঘ গবেষণার ফসল। যদিও জরাথুস্ত্রবাদ কিংবা মিথ্রাসবাদের মতো একেশ্বরবাদী ধর্মগুলো আলোচিত হয়নি। সামনে আসেনি হিন্দু এবং বৌদ্ধধর্মের মতো প্রাচ্যের অন্য ধর্মগুলো। তারপরেও রুডলফ অটোর ‘The Idea of The Holy’ এবং মির্চা এলিয়াদের ‘Sacred and Profane’-এর পরে ক্যারেনের গ্রন্থটি শুধু বিষয়বস্তুর জন্যই না; গবেষণার বস্তুনিষ্ঠতার জন্যও শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখে। জ্ঞানচর্চার তর্কে পারস্পারিক ভুল বোঝাবুঝির যুগে বিশ্ব যখন জীবনকে একঘরে করে রেখেছে; তখন ধর্মের রহস্য অনুসন্ধানীদের কাছে “এ হিস্ট্রি অব গড” হতে পারে এক নতুন পৃথিবীর দুয়ার।