দিল্লি যখন জ্বলছে, তখন গুঁতো দিয়েও কংগ্রেসের নেতাদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো যায়নি। অবশেষে একটি কমিটি গড়ে দেন অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। তারা কিছু এলাকা পরিদর্শন করে। বিদেশ থেকে ফিরে আজ নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ছুটলেন রাহুল গাঁধী। সঙ্গী হলেন দলের কিছু সাংসদ ও নেতা।
আজ সকালে সংসদে গিয়ে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। সংসদ যে চলবে না, সেটা কার্যত জানাই ছিল। দলীয় সাংসদদের রাহুল বলেন, ‘‘দিল্লির হিংসা নিয়ে সরকার আলোচনা করতে দেবে না। কিন্তু আমি দিল্লির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যেতে রাজি।’’
রাহুলের ইচ্ছার কথা জানানো হয় দিল্লি পুলিশকে। এর পরে দিল্লির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার এস এন শ্রীবাস্তবকে সংসদেই ডেকে পাঠান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লি পুলিশ তাঁরই মন্ত্রকের অধীনে।
রাহুলের সফরে অনুমোদন দিতে রাজি হয়নি দিল্লি পুলিশ। কিন্তু রাহুলও নাছোড়বান্দা। অবশেষে সফরসূচি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ‘গোপন’ রেখে অল্প এলাকায় যাওয়ার অনুমতি মিলল। কংগ্রেস নেতারা রাহুলকে নিয়ে গেলেন ‘হিংসাপুরী’ মুস্তফাবাদে ঢোকার ঠিক মুখেই ব্রিজপুরীর একটি স্কুলে। ঘটনাচক্রে যেটি কংগ্রেসের এক নেতারই স্কুল। যেখানে আগুনে পুড়ে যাওয়া স্কুলবাস, চেয়ার, কম্পিউটার, বইপত্র এখনও ঘৃণা ও উন্মত্ত হিংসার ছবি বহন করছে।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে স্কুল পরিদর্শন সেরে রাহুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই স্কুল ভারতের ভবিষ্যৎ। ঘৃণা আর হিংসা জ্বালিয়ে দিল। কারও লাভ হল না। আমি এসেছি, সকলে মিলে ভালবাসা দিয়ে কাজ করতে হবে, জোড়া দিয়ে এগোতে হবে। ভারতে, দেশের রাজধানীতে হিংসা দুনিয়ায় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। সম্প্রীতি, ঐক্য, প্রেমের শক্তি জ্বালানো হচ্ছে। এ ধরনের রাজনীতিতে শুধু এ স্কুল নয়, ভারত এবং ভারতমাতারও ক্ষতি হয়।’’ পরে তিনি টুইটও করেন: ‘‘দেখে দুঃখ হয়, ঘৃণা কী করে। ভালবাসা শক্তি, ঘৃণা দুর্বলতা। ভারত ঘৃণা নিয়ে চলতে পারে না। এটা আমাদের পথ নয়।’’ স্কুল থেকে বেরিয়ে আরও কিছুটা ঘুরে দেখতে চাইলেন রাহুল। পুলিশ যেতে দিল না। জানাল, পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে নয়। সে-কথা মেনে ফিরে গেলেন রাহুল।
রাহুলের সফরসঙ্গী, অধীর চৌধুরী বললেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ তো এখনও এই এলাকায় এসে মানুষের পাশে দাঁড়াননি। আমাদের নেতা তো কমপক্ষে এলেন।’’ দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারির পাল্টা জবাব, ‘‘এই পরিস্থিতির জন্য সনিয়া গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, রাহুল গাঁধীদের প্ররোচনামূলক মন্তব্যই তো অনেকটা দায়ী। ঠিকমতো খতিয়ে দেখলে এমনই পরিণতি বার হবে।’’