ট্
রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল গত ২৫ বছরে সারা বিশ্বে আলোচিত দুর্নীতির একটি তালিকা করেছে৷ ছবিঘরে সেখান থেকে নয়টি প্রেসিডেন্টের ব্যবসা
টিউিনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট জিন এল আবিদিন বেন আলী ১৯৮৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন৷ এই সময় তিনি এমন আইন তৈরি করেছিলেন যার কারণে তার পারিবারিক ব্যবসা আছে এমন খাতগুলোতে বিদেশিরা বিনিয়োগের অনুমতি পেতেন৷ ফলে একবার ম্যাকডোনাল্ডসকে ব্যবসার অনুমতি দেয়া হলেও প্রেসিডেন্টের পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় তা বাতিল করে দেয়া হয়৷ঘটনার উল্লেখ থাকছে৷
বিলাসবহুল জীবনযাপন
২০১০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ৷ ২০১৪ সালে গণবিক্ষোভের মুখে রাশিয়ায় পালিয়ে যান৷ এরপর তাঁর বাড়িতে পাওয়া নথিপত্র থেকে জানা যায়, কীভাবে তিনি জনগণের টাকায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন৷ ১৩৭ হেক্টর এলাকায় গড়ে ওঠা ইয়ানুকোভিচের এস্টেটে গলফ কোর্স, অস্ট্রিচ ফার্ম, ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানাসহ অনেককিছুই পাওয়া গেছে৷ ২০১৭ সালে ইয়ানুকোভিচকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
রধানমন্ত্রীর লাভ
২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় ১এমডিবি নামে একটি উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়েছিল৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক এর প্রধান ছিলেন৷ কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি এর লক্ষ্য হলেও প্রধানমন্ত্রীসহ আরো কয়েকজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফুলে ফেঁপে উঠেছিল৷
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
২০১৬ সালে পানামার আইনি প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার কাছে থাকা তথ্য ফাঁস হয়েছিল৷ এটি পানামা পেপার্স নামে পরিচিত৷ কর ফাঁকি দিতে মোসাক ফনসেকার সহায়তা নেয়াদের মধ্যে বিশ্বের অনেক নামি-দামি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ক্রীড়াবিদ অন্যান্য অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন৷ পানামা পেপার্সের কারণে আইসল্যান্ডের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জিগমুন্ডুর গুনলায়ুগসোন পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন৷
প্রেসিডেন্টও ভাগিদার!
পর্যটন প্রসারে মালদ্বীপের ৫০টির বেশি দ্বীপ ও কোরাল লেগুন টেন্ডার ছাড়াই লিজ দেয়া হয়েছিল৷ সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লা ইয়ামিনসহ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ঘুসের বিনিময়ে এই কাজ করেছিলেন৷ ইয়ামিন প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে৷
গুপ্তার সঙ্গে জুমার গুপ্ত সম্পর্ক
বলছিলাম সাউথ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত গুপ্তা পরিবারের কথা৷ রাজনীতিবিদদের ঘুস ও প্রেসিডেন্টের সন্তানদের লোভনীয় চাকরি দেয়ার মাধ্যমে এই পরিবার সাউথ আফ্রিকা প্রশাসনে দারুণ প্রভাব বিস্তার করেছিলেন৷ রেল ও বন্দর খাতে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার পাওয়া ছাড়াও মন্ত্রী অদলবদলের ক্ষমতা ছিল তাদের৷ এছাড়া এই পরিবারকে বাঁচাতে কর ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করেছিলেন জুমা৷
প্যারাডাইজ পেপার্স
২০১৭ সালে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বিশ্বের ১২০ জন রাজনীতিবিদ, রাজ পরিবারের সদস্য, অলিগার্ক ও প্রতারকের কর ফাঁকির হিসেব দেয়া হয়৷ জানা যায়, তাদের কারণে বিভিন্ন দেশ বছরে কর্পোরেট কর থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার এবং ব্যক্তিগত কর থেকে আরো কয়েক বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে৷ বিভিন্ন খনির চুক্তি পেতে গ্লেনকোর কোম্পানি ডিআর কঙ্গোর সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলাকে ঘুস দিয়েছিলেন বলে ঐ প্রতিবেদনে জানা যায়৷
তদন্ত করায় চাকরিচ্যুত
২০১৩ সালে তুরস্কের পুলিশ দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল৷ এর মধ্যে দুটি বাড়ি ছিল শাসক দলের সদস্যদের পরিবারের৷ ঐ সময় পুলিশ ৫২ জনকে আটক করেছিল, যাদের সবাই প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যেপ এর্দোয়ানের দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন৷ এর্দোয়ান এই অভিযোগ অস্বীকার করে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য ও আইনজীবীদের চাকরিচ্যুত কিংবা বদলি করেছিলেন৷
দুর্নীতির কারণে সরকার পতন
স্পেনের পিপলস পার্টির নেতাদের ঘুস ও সুবিধা দেয়ার বিনিময়ে সরকারি বিভিন্ন চুক্তি পেতেন ব্যবসায়ী ফ্রান্সিসকো কোরেয়া৷ বিষয়টি সামনে আসার পর ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয় সরকারের পতন হয়৷ রাখয়ের ঘনিষ্ঠ এক সহকর্মীকে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়৷ আর কোরেয়াকে দেয়া হয় ৫১ বছরের কারাদণ্ড৷