ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস নির্বাচিত হওয়ার পর তার শূন্য ঘোষিত আসনে কে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন? তাপস ধানমন্ডিতে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। গত সংসদেও
তিনি সদস্য ছিলেন। বিধি অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে সংসদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়। ব্যারিস্টার তাপস পদত্যাগ করার পরই কে তার স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে আওয়ামী লীগসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে জোরালো আলোচনা চলছে। নির্বাচন হয়ে যাওয়া ও তাপস নির্বাচিত হওয়ার পর ধানমন্ডি আসনে সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিদলীয় মনোনয়ন কে পেতে পারেন এবং কার নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ব্যারিস্টার তাপসের আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। সরকারের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন। গত সংসদ এবং চলতি সংসদেও ব্যারিস্টার তাপস দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। তাপস সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়ার পরই নানক সংসদ সদস্য পদে পুনরায় আসীন হওয়ার আশা প্রবলভাবেই লালন করতে থাকেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানকের ঘনিষ্ঠ সূত্রে আরো জানা যায়, বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া না হলে নানক এ আসনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সময় জাহাঙ্গীর কবির নানককে কেবিনেট মন্ত্রী করা হবে বা প্রতিমন্ত্রী করা হলেও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেই আশা করেছিলেন। কিন্তু তা করা হয়নি। তাকে দলের প্রেসিডিয়ামে স্থান দেওয়া হয়েছে। দলের নীতি-নির্ধারণী সর্বোচ্চ সংস্থায় নির্বাচিত হওয়ায় নানক দারুণভাবে আনন্দিত। কিন্তু ধানমন্ডি আসন থেকে এমপি হওয়ার আশা ত্যাগ করেননি।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিকানাকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার পুত্র ববি ধানমন্ডিতে ব্যারিস্টার তাপসের আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হতে পারেন। পুত্রকে সক্রিয় রাজনীতিতে আনা এবং সম্মানজনক অবস্থানের ব্যাপারে শেখ রেহানা আগ্রহী বলে জানা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আগ্রহী। বিদেশি বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে যোগাযোগ, আলাপ-আলোচনার ব্যাপারে ববি দক্ষতা দেখিয়েছেন, যা বিদেশিদের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে। যতদূর জানা যায়, শেখ ফজলুল করিম সেলিমের দুই পুত্রই রাজনীতিতে গভীরভাবে আগ্রহী। শেখ সুভাষ ও শেখ সুহাস নামের পুত্ররা গোপালগঞ্জ ও রাজধানীর তেজগাঁও থেকে নির্বাচন করতে চান। একজন গেপালগঞ্জে পিতা শেখ সেলিমের আসনে তার অনুপস্থিতিতে নির্বাচন করতে এবং অপরজন ঢাকা থেকে প্রার্থী হতে আগ্রহী। তবে তারা কেউই পিতা শেখ সেলিম ও ফুফু শেখ হাসিনার ইচ্ছার বাইরে কিছু ভাবেন না বলেই জানা যায়।
দলীয় সূত্রে আভাস পাওয়া যায়, শেখ রেহানার পুত্র ববিকেই ধানমন্ডিতে এমপি হিসেবে ব্যারিস্টার তাপসের স্থলাভিষিক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানককে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।