কেমব্রিজের ডক্টরেট পরমানু বিজ্ঞানী, তিনি বাংলাদেশের বইমেলায় নিজের পুরোনো বই ফটোকপি করে বিক্রি করেন। কেউ ছাপতে চায়না উনার বই। বইয়ের নাম “বাঙালির সাফল্য, বাঙালির ব্যর্থতা”। বাংলাদেশে সকল মেধাবী মানুষের পরিনতি এটাই। তার ওপর একটি অনলাইন পত্রিকার প্রতিবেদন নিচে পেশ করলাম। আমার একটাই কথা মনে হলো - বইটা কিনতে হবে। আপনাদেরও অনুরোধ করি কেনার জন্য। কেনো করছি জানিনা …
বাংলা একাডেমি চত্বরে হঠাৎই চোখে চোখ পড়ল এক প্রবীণের সঙ্গে। বৃদ্ধের জিজ্ঞাসা, ‘বাবা, কিছু বলবে?’ তারপর কথায় কথায় জানা গেল, তার নাম ফ র আল-সিদ্দিক। তিনি বাংলা একাডেমির পাশেই পরমাণু শক্তি কমিশনে চাকরি করতেন। অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মক’র্তা নিজের লেখা একটি বই ফটোকপি করে বইমেলায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন। ‘বাঙালির জয়, বাঙালির ব্যর্থতা’ নামের বইটি ২০০০ সালে পাঁচশ কপি প্রকাশ করে পরমা প্রকাশন। এরপর প্রকাশক কথা দিলেও আর প্রকাশ করেননি। পরে প্রকাশক বলে দিয়েছেন, অন্য প্রকাশনি থেকে বই প্রকাশ করার জন্য। এরপর থেকে প্রতি বছর নিজেই দুইশ কপি বই ফটোকপি বের করে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন তিনি। এ বছর বইমেলাতে বই ঘুরে ঘুরে বিক্রি করবেন, তাই ফটোকপি করেছেন একশ কপি।
বাঙালির ব্যর্থতার জায়গার কথা বলতে গিয়ে ফ র আল-সিদ্দিক বলেন, ‘‘দেশভাগের সময় আমরা পাকিস্তান ভালো মন নিয়েই চেয়েছিলাম। কিন্তু পাকিস্তান ‘ফাঁকিস্তান’ হয়ে গেল। তখন আমাদের লড়াই করতে হলো। লড়াই করে জিতলাম। কিন্তু এখন আমরা তো সবকিছুতেই ব্যর্থ। আমরা স্বা’ধীনতা সং’গ্রাম করেছি, কিন্তু স্বা’ধীনতা রাখতে পারলাম না। আবার স্বা’ধীন বাংলাদেশ হয়ে গেল ‘ফাঁ’কিস্তান’। দেশে যেরকম চুরিচামারি হচ্ছে, এটা কী স্বা’ধীন দেশ হলো?’’
আমাদের কী কী অর্জন করেছি, কী কী আমাদের ব্যর্থতা সেটা আমি তুলে ধরতে চাই। যে জাতি যারা ভুল না জানতে পারে, সেই জাতি বড় হতে পারে না। তাই ভুলগুলো জানা জরুরি’, যোগ করেন আল-সিদ্দিক। সফলতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে বইমেলা হচ্ছে, এই একটা জিনিসই আমাদের অর্জন। এটাই বাঙালির জয়।’ তবে বইমেলাকেও সমা’লোচনার ঊর্ধ্বে রাখেননি ফ র আল-সিদ্দিক, ‘যাদের বই বাজারে প্রচলিত না, তাদের জন্য বইমেলায় আলাদা স্টল দিচ্ছে না কেন? যারা নিজেরা নিজেদের বই প্রকাশ করছে, কিন্তু প্রকাশক না। তাদের জন্যও তো স্টল থাকা দরকার। যেখানে তারা নিজেদের বই বিক্রি করতে পারবেন। অনেক ভালো ভালো বই প্রকাশ হয় না।’