এন্টারপ্রেনার ডেস্ক
বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) তখন ঘড়ির কাটায় রাত ৯টা। শুরু হলো ই-ক্যাবের ঈদ আড্ডা।সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এগিয়ে চলেছে ঈদ আড়ডা।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
সঞ্জালনায় ই- ক্যাবের যোগ্য সাধারন সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। সভাপতিত্বের আসন অলংকৃত করেছেন ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার। খাতটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সকলকে নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে যারা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
শমী কায়সার করেনোকালে ডিজিটাল কমার্সের অভাবনীয় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে জানান। তিনি ডিজিটাল কমার্সকে শিল্পখাত হিসেবে ঘোষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপও করেন।
ই-ক্যাবকে দেশে ডিজিটাল কমার্স রূপান্তরের অগ্রণী সৈনিক হিসেবে আখ্যায়িত করে মন্ত্রী বলেন, গ্রাহকরা যাতে কোনোভাবেই প্রতারিত না হয় সেদিকে ই-ক্যাবকে আরও সচেষ্ট হতে হবে। সুযোগ যেখানে থাকবে অপরাধীরা সেখানে অপরাধ করবে-সেটা প্রতিটি ক্ষেত্রেই। এটা বিক্রেতার পাশাপাশি ক্রেতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কাজেই ডিজিটাল অপরাধ ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। যে যত বেশি ডিজিটাল দক্ষ হবে সে তত বেশি ব্যবসায় সফল হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সদস্যদের দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ই-ক্যাবকে কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান।
“আজ ই-ক্যাব আছে বলেই অনেক কাজ সহজ হয়। তাই একে ছোট করে দেখার বিষয় নয়। তাই একটি শিল্পখাত প্রতিষ্ঠায় একটি সংগঠনের ভূমিকা ও গুরুত্ব যেন কেউ ভুলে না যান। কেননা, বাংলাদেশ নয়; বিশ্বে এমন কোনো ব্যবসা থাকবে না যা ডিজিটালি হবে না। ই-ক্যাব জন্ম থেকে যথাযথ নেতৃত্ব পেয়েছে বলেই আজকে দেশে ব্যবসার ডিজিটাল রূপান্তর সহজ হয়েছে।”
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল যুগে প্রচলিত ব্যবসা-বাণিজ্য অনিবার্য কারণেই ডিজিটাল বাণিজ্যে রূপান্তরিত হবে। ডিজিটাল যুগ হবে ক্যাশলেস সোসাইটির যুগ। এরই ধারাবাহিকতায় কাগজের সভ্যতা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। সামনের দিনে প্রাকৃতিক ও প্রযুক্তিগত কারণে কাগজ বলে কিছু থাকবে না বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। ডিজিটাল যুগে প্রচলিত ব্যবসা-বাণিজ্য অনিবার্য কারণেই ডিজিটাল বাণিজ্যে রূপান্তরিত হবে।
তিনি মনে করেন,ডিজিটাল কমার্সকে বাণিজ্যখাত হিসেবে গড়ে তুলতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।
ডিজিটাল কমার্সের বিকাশে ডাকঘরের বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগাতে ইতোমধ্যে আব্দুল ওয়াহেদ তমাল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হয়েছে জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় ডাক বিভাগ হবে ডিজিটাল কমার্স প্রসারের ডিজিটাল মহাসড়ক।’
ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতাই বলে যেকোনো খাত গড়ে তুলতে বাণিজ্যিক সংগঠন অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের বৈপ্লবিক পরিবর্তনে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) উদ্যোগ তুলে ধরেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, মাত্র ৩৬ সদস্যের বিসিএস এর মাধ্যমে ৯৮-৯৯ সালে কম্পিউটারের ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারের মাধ্যমে কম্পিউটার জনগণের কাছে সহজলভ্য করার প্রচেষ্টা বিসিএস এর সমন্বিত উদ্যোগের ফসল। বাণিজ্যিক প্লাটফর্ম হিসেবে ই-ক্যাবকেও অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাণিজ্য তো দূরের কথা ই-কমার্স বোঝার লোক ছিল না এক সময়। কিন্তু করোনাকালে আপনারা দেখিয়ে দিয়েছেন গরুর হাট পর্যন্ত অনলাইনে হতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি পরোক্ষভাবে আমাদের ইতিবাচক পথে এগিয়ে দিয়েছে। এই মার্চে দেশে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার ৩,৪৪০ জিবিপিএস-এ পৌঁছেছে। ঈদে ৪০০০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে মোবাইলে।
মন্ত্রী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সদস্যদের দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণে ই-ক্যাবকে কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে ই-ক্যাবকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, এখন কোনো বাণিজ্য সংগঠন কেবল ঢাকাকেন্দ্রিক একটি কেন্দ্রীয় কমিটি করে সেই খাতকে দেশব্যাপী ছড়াতে পারবে না। বিসিএস প্রমাণ করেছে শাখা কমিটি কতো প্রয়োজনীয়। এখন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসাতো কেবল ঢাকাকেন্দ্রিক নয়- তাই দেশব্যাপী ট্রেড বডির সংগঠন থাকতে হবে।
তিনি ই-ক্যাবকে বিভাগ, জেলা বা উপজেলা পর্যন্ত সাংগঠনিক কাটামো গড়ে তোলার ও তাদের সক্রিয় করার আহ্বান জানান।
ই-ক্যাব উপদেষ্টা সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, সহ সভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনুসহ অন্যান্য পরিচালক ছাড়াও সাধারণ সদস্যরা আড্ডায় বক্তব্য রাখেন। তারা ই-ক্যাব ও ডিজিটাল বাণিজ্য বিষয়ক নানা প্রসঙ্গ আলোচনা করেন। ই-ক্যাবের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে একটি চক্র বিতর্ক সৃষ্টি করলেও তা সম্মিলিত ভাবেই মোকাবেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সাধারণ সদস্যরা। একজন বক্তা ইন্টারনেট এর গুণগত মান উন্নত হবার বিষয়ে প্রশংসা করে জানান যে তিনি প্রত্যন্ত এলাকা থেকে জুমে এই সভায় অংশ নিতে পারছেন। তিনি করোনাকালে ইন্টারনেটের সচল সজীব থাকারও প্রশংসা করেন।