জন্মগত ভাবে একজন কৃষক একজন উদ্যক্তা।সে তার জমিনে ফসল ফলায় এবং তা বাজারে বিক্রি করে। সম্পুর্নভাবে সে স্বাধীন।
কিম্বা একজন গ্রামের গৃহবধূ সে তার উঠনে একটি গরু কিম্বা ছাগল পালন করেন। এক সময় তা বিক্রি করেন। তিনিও কিন্তু একজন উদ্যক্তা।
একটি গ্রাম মানে ৩০০ হতে চারশত পরিবারের বাস। প্রতিটি পরিবার যদি একটি করেও গরু পালে করেন তাহলে তিন শত গরুর এক বিশাল খামার হয়ে উঠতে পারে গ্রামটি।
তিনশত পরিবার হতে ত্রিশজন বেকার যুবক যারা নিজের পায়ে দাড়াতে চায়, তাদেরকে ট্রেনিং দেয়ার মাধ্যমে আমরা উদ্যক্তা গড়ে তুলতে পারি।
যারা মূলত গ্রামীদের নিয়ে ব্যবসাটা পরিচালনা করবেন।
এখানে গ্রামীন জনপদ দুইভাবে লাভবান হবেন।
১. প্রতিটি ঘরে গরু বিক্রির টাকা পৌছে যাবে।
২. গ্রামের ৩০ টি যুবক কর্মক্ষম হবেন। অর্থাৎ ৩০ জনের বেকারত্ব দূর হবে।
ভিশন : বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম হবে অর্থনীতিক কেন্দ্রবিন্দু। কোনো যুবক চাকরির জন্যে অন্যের দারস্থ হবে না।তার কর্মসংস্থান সৃস্টি করবে এবং একটি গ্রামকে একটি বৃহৎ শিল্পে রুপান্তর করবে।
মিশন:গরু মোটাতাজা করন প্রকল্প মাধ্যমে প্রতি মাসে অন্তত একটি গ্রাম নির্ধারন করা, ১০ জন উদ্যক্তা সৃস্টি করে তাদের মূলধনের ব্যবস্থ করনের মাধ্যমে ১০০ টি পরিবারকে গরু পালনের আওতায় নিয়ে আসা।
গরুর গোবর থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন এবং গ্রামে তা বিক্রির ব্যবস্থা করা। যার মাধ্যমে আরো ১০ জন শিক্ষিত যুবকের কর্ম সংস্থান করা।
ভ্যালু’স: একটি গ্রাম। পুরো গ্রাম মিলে একটি বৃহৎ খামার। খামারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে কিছু উদ্যক্তা।পুরো গ্রাম এক ইউনিট ব্যবসায়ীক কেন্দ্র পরিনত হবে।গ্রাম হয়ে উঠবে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র।
কৃষি খামার উদ্দেশ্য: উদ্যক্তা সৃস্টির মাধ্যমে সমাজের অংশগ্রহনের ভিত্তিতে দুধ, মাংস, শক্তি (জৈব) এবং বায়ো-রোড উৎপাদনের জন্য একটি গ্রাম ভিত্তিক ডেইরী ও গরু মোটাতাজাকরন প্রকল্প গড়ে তোলা।
প্রজেক্ট সামারি:
পুরো গ্রাম জুড়ে গরুর খামার গড়ে তোলার জন্য একটি দিকনির্দেশনা। এ জন্য প্রথবে গ্রামের বেকার যুবকদেরকে উদ্যক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তারা হবে এই ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু।তাদের উদ্যোগে যারা গরু পালনে আগ্রহী,সেই মানুষ গুলো খুজে বের করতে হবে। যেখানে গরুর থাকার ব্যবস্থা হবে। উদ্যক্তাদের ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু জমি লিজ নিয়ে ঘাস চাষের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ঘাসের অভাব না হয়। প্রথমে উদ্যক্তাদের প্রাথমিক ইনভেস্টমেন্ট যোগার করে দিতে হবে, সুরু করার জন্যে। এর বাইরে বর্গা সিস্টেমে গরু সংগ্রহ করা হবে এবং গরু পালন করা হবে। আর এ বর্গা ব্যবস্থাটি কিন্তু আমাদের দেশে হাজার বছর ধরেই চলে আসছে। আমি শুধু এ বর্গা সিস্টেমটির আধুনিক ফরম্যাট করছি এবং এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিচ্ছি।
সিচুয়েসন এনালাইসিস: একটি গ্রাম, একটি বৃহৎ খামার।এখানে কাজ করবে একঝাক তরুন উদ্যক্তা।যাদের হাত ধরে গ্রামটি পরিনত হবে একটি বৃহৎ খামারে।গ্রামের প্রতিটি ঘর বাড়তি আয়ের লক্ষে একটি করে দুধের গরু এবং একটি করে মোটা তাজা করনের গরু পালন করবে।গরুটি সরবরাহ এবং বাজারজাত সহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় থাকবে উদ্যক্তাগন। গো খাদ্যের জন্যে ঘাসের ভাষ হবে।গোবর থেকে উৎপাদন হবে গ্যাস।এই সব উদ্যক্তাদের হাত ধরে ভাবে গ্রামীন অর্থনীতিতে ঘটবে নতুন বিপ্লব।
গোল: সারা বাংলাদেশে আগামী ৫ বছরে ১০০০০ নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হবে। যার মাধ্যমে ১০০০ গ্রাম নিয়ে ১০০০ গরুর খামার গড়ে উঠবে।
অবজেক্টিভ : ১. ট্রেনিং এর মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা হবে।স্টার্ট আপ,পুজি গঠন সম্পর্কে শেখানো হবে এবং পুঁজি গঠনে সহযোগিতা করা হবে।এবং সাক্সেস না হওয়া পর্যন্ত মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
২. একটি ব্যাংক এর সাথে পার্টনারশীপ থাকবে।যাদের মাধ্যমে উদ্যক্তাদের প্রাথমিক সহযোগিতা দেয়া হবে।
৩. প্রতিটি জেলার স্থানীয় প্রেসক্লাব এটির সাথে সম্পৃক্ত থাববে।
৪. ডিসি সাহেবের নেতৃত্ব এ ব্যবসায়ী ও ব্যাংকার দের নিয়ে একটি লোকাল পরিচালনা পর্ষদ থাকবে।যারা ফান্ড গঠনে সহযোগিতা করবে।
৫. একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর সাথে পার্টনারশিপ করা হবে।যাতে করে ট্রেনিং এ সহযোগিতা ও এ বিষয়ক সহযোগিতা পাওয়া যায়।
উদ্যোক্তাগন মুলত ব্যবসাটি পরিচালনা করবে।
ক্রিটিক্যাল সাক্সেস ফেক্টর: ১. সঠিক জনবল গড়ে তুলে তাদের কে পুজি গঠনে সহযোগিতা ও কঠিন ভাবে মনিটরিং এর মাধ্যমে কাজটির সফলতা আনা যেতে পারে।
বাংলাদেশীতে লাইভস্টোক ফার্মিংয়ের বর্তমান অবস্থা:
বাংলাদেশ পশু সংকট আছে। এ কারণেই দেশটি ভারতীয় গরুর মাংসের উপর নির্ভর করে।
গরু আমদানিতে ভারতের কড়াকড়ির কারনে গবাদি পশু মাংসের দাম সম্প্রতি 40 শতাংশের বেশি বেড়েছে। এক হিসাবে, দেশীয় উৎপাদিত মাংস দেশের চাহিদার মাত্র 50 শতাংশ পূরণ করে। বিশ্লেষকদের দাবি সমস্যা স্বদেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির দ্বারা সমাধান করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য,
সর্বনিম্ন মাংস গ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশ একমাত্র বার্ষিক খরচ
3.2 কেজি প্রতি ব্যক্তির (www.dls.bd)। বাংলাদেশের মাংসের ব্যবহার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম
ভারত ও পাকিস্তান এর তুলনায় (www.fao.org)। সর্বোচ্চ মাংস গ্রহন করে
অস্ট্রেলিয়া, মাথাপিছু প্রতি ব্যক্তির 90 কেজি মাংস গ্রহন করে। বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের ৮০% মানুষ দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত যাদের মাথাপিছু আয় 13414 ডলারের।
তারা মাঝে মাঝে মাংস গ্রহন করে থাকে । আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে মাংসের চাহিদার তুলনায় 6.7 মিলিয়ন টন বেশি পরিমাণে সরবরাহ করা হচ্ছে ।
এ মূহুর্তে মাংসের চাহিদা1.04 মিলিয়ন টন পৌঁছেছেন। অতএব, এটি একটি বিদ্যমান সঙ্কটকে আন্ডারলাইন করে।
একশন প্লান:
অরগানাইজার: ফাইনেন্সিয়াল মিডিয়া ক্লাব।
লোকাল পার্টনার: ১.জিলা প্রেসক্লাব
ফাইনেন্সিয়াল পার্টনার: বিশেষায়িত ব্যাংক।
এক্সপার্ট সাপর্ট: সরকারী কিম্বা বেসকারী বিশ্ববিদ্যালয়।
অপারেশন প্লান: স্থান: ১.মেহেপুর এবং নাটরে প্রথমে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সুরু হবে।
৩. পর্যায়ক্রমে ৬৪ টি জেলার ১০০০ টি গ্রাম প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
কার্যক্রম:
ক. ট্রেনিং এর মাধ্যমে প্রতিটি গ্রাম টার্গেট করে ১০ জন করে উদ্যক্তা গড়ে তোলা হবে।
খ. ব্যাংক/লোকাল ব্যবসায়ীদের ইনভেস্টমেন্ট এর মাধ্যমে উদ্যক্তাদের প্রাথমি পুজির ব্যবস্থা করা হবে।
গ. উদ্যক্তাগন গ্রাম নির্বাচন করে এবং গরু পালনকারী নির্বাচন করবে।
ঘ. ঘাসের আবাদ করার মতন জমি প্রথমে লিজ নিবে পরে কিনে নিবে।
উ. বায়োগ্যাস ক্ষেত্র স্থাপনের যাইগা কিনবে কিম্বা সংগ্রহ করবে এবং সার উৎপাদনের ব্যবস্থা করবে।
প্রডাক্ট প্লন:
ক. গরু মোটা তাজা করন।
খ. দুধ উৎপাদন।
গ. বায়োগ্যাস উৎপাদন।
ঘ.জৈব সার উৎপাদন।
যেহেতু প্রতিটি বাড়িতে একটি করে গরুর মোটা তাজা করন করবে এবং প্রতি ১০ বাড়ী অন্তর একটি করে দুধের গাভী থাকবে সুতরাং এখানে সেড করার প্রয়োজন হবে না।
মার্কেটিং প্লান:
গরু : লোকাল মার্কেট, প্রতি তিন মাস অন্তর গরু বিক্রি করা হবে।
কোরবানি ঈদ এর সময় ঢাকাতে গরু বিক্রি করা হবে।
দুধ: লোকাল মার্কেট সহ দুগ্ধজাত পন্য বানানো প্রতিষ্টান সহ মিল্কভিটা,প্রান প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।
বায়োগ্যাস: বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গ্রামীদের মধ্য গ্যাস সরবরাহ করা হবে।
জৈব সার: লোকাল কৃষক হবে এটির মূল ক্রেতা।
বাংলাদেশ জনবহুল দেশ। স্বাভাবিকভাবেই বেকার যুবকের সংখ্যাও বেশি। গ্রামে গ্রামে উদ্যক্তা গড়ে তোলার মাধ্যমে গরুর খামার প্রতিষ্ঠা করলে এসব বেকারকে সহজেই এতে কাজে লাগানো যাবে। আর তখন এ বেকার যুবকরাই হয়ে উঠবে দেশের মূল্যবান সম্পদ। তাদের হাত দিয়েই ত্বরান্বিত হবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এ যুবকরা তখন আর বোঝা হয়ে থাকবে না, বরং সম্পদে পরিণত হবে। অন্যদিকে গ্রামে কর্মসংস্থান বাড়বে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং শহরের ওপর চাপ কমবে। সুতরাং অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে হলে দেশজুড়ে উদ্যক্তা সৃস্টির মাধ্যমে গরুর খামার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।