মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল
সাধারণ সম্পাদক, ই-ক্যাব
কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে এখন দেশব্যাপী যে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে, এ নিয়ে ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশনের (ই-ক্যাব) অবস্থানটা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই- ই-কমার্স কোম্পানিগুলো কিভাবে পরিচালিত হবে তার কোনো নীতিমালা এখনো নেই। আমরা গত বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই নিতীমালার অর্থাৎ ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (SOP) খসড়া প্রদান করেছিলাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধায়নে আমরা বেশ কয়েকটি স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন করেছি, যা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সরকারিভাবে এই নীতিমালা প্রকাশিত হলে সকল ই-কমার্স কোম্পানি একটি নিয়ম নীতির আওতায় পরিচালিত হবে। ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয় স্বার্থ সংরক্ষণ করবে এই নীতিমালা। গত বৎসর ই-ক্যাবের রিসার্চ টিমের অধীনে ঢাকা ইউনিভার্সিটির পাঁচজন শিক্ষকসহ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তারা ইভ্যালির বিজনেস মডেল নিয়ে রিসার্চ করে একটি রিপোর্ট জমা দেন। এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়। ই ক্যাব এর পক্ষ থেকে আমরা এই নীতিমালা চূড়ান্ত করার তাগিদ দিয়ে আসছি বহুদিন ধরে। আশা করছি খুব দ্রুতই এই নীতিমালা প্রকাশিত হবে।
এছাড়াও আমাদের দেশে এখনো কোনো ESCROW সার্ভিস চালু হয়নি, যার মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতা তাদের পেমেন্ট এর নিশ্চয়তা পাবে। প্রায় দুই বছর আগে থেকে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি ডিভিশনসহ বিভিন্ন সরকারি মহলে একাধিকবার প্রস্তাব এবং তাগিদ দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ইতোমধ্যে এই বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আমরা আশা করি, ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পদ্ধতি অর্থাৎ নীতিমালা এবং ESCROW সার্ভিস চালু হলে এদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। আমার বিশ্বাস ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে এখন যে অনাস্থা এবং অবিশ্বাসের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে তার দ্রুত সমাধান হবে। গত এক বছরে কয়েক লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করেছে ই-কমার্স খাত। সম্ভাবনাময় এই ই-কমার্স খাতকে একটি দৃঢ় অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে নিষ্ঠার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করার আহ্বান জানাই এবং সরকারের কাছে একটি দ্রুত নীতিমালা প্রকাশ এবং ESCROW সার্ভিস চালু করার দাবি জানাই।