এন্টারপ্রেনার ডেস্কঃ সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা করা এবং গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন। তিনি বলেন, গুটিকয়েক কর্মকর্তার জন্য সাংবাদিক বান্ধব শেখ হাসিনা আজ সমালোচনার মুখে!
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘আজকের ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক। দোষ কার, কে দায়ী তা জানি না। তবে মনে হয়েছে, একজন পেশাদার সাংবাদিকের সাথে অন্যভাবে আচরণ করেও বিষয়টি সমাধান করা যেত। গুটিকয়েক কর্মকর্তার জন্য সবসময় সাংবাদিক বান্ধব শেখ হাসিনার সরকার আজ সমালোচনার মুখে। ’
আশরাফুল আলম খোকন বলেন, ‘সাড়ে সাত বছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ে কাজ করেছি। নিজে চোখে দেখেছি তিনি নিজে কতটা সাংবাদিক বান্ধব। সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য নিজে উদ্যোগী হয়ে কত কত কাজ করেছেন। এই রকম পরিস্থিতি আগেও হয়েছে। দুই পক্ষের সাথে কথা বলেই সমাধান হয়েছে। এমন অনেক সমাধান নিজেও করেছি। হয়তো কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি অথবা সাংবাদিকের সাথে কথা বলেছি। “পেশাদার” আবারো বলছি পেশাদার সাংবাদিকদের চেষ্টা করেছি ঝামেলামুক্ত রাখতে। সদিচ্ছা থাকলে অ-সমাধানযোগ্য কোনো কিছুই পৃথিবীতে নাই। পেশাদার আর অ-পেশাদারদের সাথে আচরণ একরকম হওয়া উচিত না। রোজিনা আপার মুক্তি চাই।’
১৮ মে ২০২১ তারিখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাস এ ভাবেই তিনি তার অনুভূতি প্রকাশ করেন।
এন্টারপ্রেনার বাংলাদেশ অনলাইন পোর্টালের ফেসবুক পেজ- এ গত ২২ শে মে,২০২১ তারিখে এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন লন্ডন থেকে জনাব কামাল দেওয়ান কেডি, বীর মুক্তিযোদ্ধা (বিএলএফ) অপারেশন ‘হিট অ্যান্ড রান’; পরিচালক শিল্পকলা একাডেমী লন্ডন ও যুক্তরাজ্যের কমিউনিটি পার্সোনাল।জার্মান থেকে উপস্থিত ছিলেন মীর মোনাজ হক, বীর মুক্তি্যোদ্ধা, প্রধান সম্পাদক, এশিয়া টুডে জার্মানি ও ইউরোপ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্ত হয়েছিলেন বাবুল হোসেন, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী।আরো যুক্ত হয়েছিলেন বাংলদেশ থেকে বিচ্ছু জালাল, বীর মুক্তি্যোদ্ধা,সেক্টর-২ বাংলাদেশ ফোর্সেস এর গেরিলা সেক্টর কমান্ডার গেরিলা গুরু কমান্ডো মেজর হায়দারের কমান্ডো ট্রেনিং প্রাপ্ত ঢাকা গেরিলা বাহিনীর ” Y” প্লাটুন,আজিমপুর সজীব গ্রুপের চোরাগোপ্তা হামলার দূর্ধষ বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচ্ছু বাহিনীর বিচ্ছু জালাল।
জনাব জাহিদুজ্জামান সাঈদ, এডিটর - ইন - চিফ, এন্টারপ্রেনার বাংলাদেশ অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা ও পরিকল্পনার দায়িত্ব পালন করেন।
সম্মানিত বক্তাগন মনে করেন, রোজিনা ইসলাম ইস্যুতে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। একটি মহল তাদের দূর্নীতি ঢাকতে এধরেন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার আমাদের ভার্চুয়াল আলোচনার দিন তার জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার পর রায় দেয়ার জন্য রোববার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। সেদিন রোজিনা ইসলামের জামিনের বিরোধিতা করলেও রোববার রাষ্ট্রপক্ষ জামিন আবেদনে আপত্তি করেনি।
গত ১৭ই মে ছয় ঘণ্টা আটকে রাখার পর রাতে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে রোজিনা ইসলামকে হস্তান্তর করা হয়। রাতে তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টে মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নথি চুরি এবং অনুমতি ছাড়া সেই নথির ছবি তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে।তাকে প্রথমে আটকে রাখা এবং তারপর শত বছরের পুরানো আইনে মামলা দেয়ার ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সাংবাদিকদের সব সংগঠন প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।
আশার কথা বাংলাদেশে অফিসিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টের মামলায় প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম আলো পত্রিকার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন দিয়েছেন আদালত।
পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে তাকে জামিন দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি আবদুল্লাহ আবু বলেন, রোজিনা ইসলামের মামলাটি স্পর্শকাতর হলেও আমরা তার জামিনের আবেদন বিবেচনা করার জন্য বলেছি। তবে আমরা বলেছি, পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। আসামী পক্ষ তাতে রাজি হয়েছে।
রোজিনা ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জানিয়েছেন, পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত। জামিনের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ যে শর্ত দিয়েছে, তাতে আমাদের আপত্তি নেই।
তার আরেকজন আইনজীবী প্রশান্ত কর্মকার বলেন, ১৫ জুলাই এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে। আমরা আইনগতভাবে এই মামলা মোকাবেলা করবো। রোজিনা ইসলাম আসার পরে তিনি যে সিদ্ধান্ত নেন, সেভাবে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেবো।
যারা হেনস্থা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা, সেই প্রসঙ্গে প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, সাংবাদিক সব সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।