অনলাইন ডেস্কঃ গত ৮ মাস ধরে করোনাকালীন বিভিন্ন পরিস্থিতি বিভিন্ন সেবামূলক কর্মসূচী বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে সম্মুখে থেকে কাজ করার জন্য ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ইকমা পুরষ্কার প্রদান জাহাঙ্গীর আলম শোভনকে। গত ৮ নভেম্বর ঢাকার পূর্বাচল ক্লাবে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৯ জন সরকারী কর্মকর্তাসহ মোট ১২জনকে এই পুরষ্কার হস্তান্তর করা হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এর হাত থেকে জাহাঙ্গীর আলম শোভনের ‘‘ই-কমার্স মুভার্স এ্যাওয়ার্ড – বা ইকমা পুরষ্কার গ্রহণ করেন ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার। এসময় শোভন করোনা আক্রান্ত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর আলম শোভন ই-ক্যাবের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা পরিস্থিতির শুরুতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে নিত্যপণ্য সরবরাহের অনুমতির ব্যাপারে পেশাগত ও দাপ্তরিক সহযোগিতা ছাড়াও ই-ক্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠান সমূহের যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এছাড়া রাজধানীর রাজাবাজার ও ওয়ারী এলাকায় লকডাউন চলাকালে কেন্দ্রীয় লকডাউন কমিটির সদস্য হিসেবে মাঠ পর্যায়ে সেবা তদারক করেন এবং সরাসরি উপস্থিত থেকে প্রতিদিনের নিত্যপণ্য সেবা নিশ্চিত করেন। সমাধান করেন সদস্য প্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যা। ই-ক্যাবের মানবসেবা কার্যক্রম চালু হলে এখানেও অংশ গ্রহণ করেন। বিশেষ করে ডিজিটাল গরুহাটের সার্বিক তদারকী এবং স্লটারিং হাউজে অবস্থান করে গরু জবাই ও প্রতিটি ক্রেতার মাংশ ডেলিভারীর কাজ নিশ্চিত করেন। বর্তমানে ই-ক্যাবের স্কুল ভিত্তিক কার্যক্রম প্রতিভা অন্বেষনের ডিজিটাল কর্মসূচী ই-জিনিয়াসের টিম লিডারের দায়িত্ব পালন করছেন।
পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ই-ক্যাব করোনাকালীন সময়ে দেশ, সরকার ও মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যে সেবা দিয়েছে তা মাইলফলক হয়ে থাকবে। এসব কর্মসূচী বাস্তবায়নে যেসব ব্যক্তিবর্গ সহযোগিতা করেছে ও দায়িত্ব পালন করেছে তাদেরকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই।
জাহাঙ্গীর আলম শোভন একজন লেখক। জীবনমুখী ও আত্ম উন্নয়মূলক গ্রন্থসমূহ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। ২০১৯ সালে দেশের প্রথম ই-কমার্স সামিটে দেশসেরা ই-কমার্স কনটেন্ট রাইটারের পুরষ্কার জিতেন| ২০১৭ সালে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন কতৃক প্রকাশিত ৪০ প্রশংসিত বাংলাদেশীকে নিয়ে এক বিশেষ ক্রোড়পত্রে স্থান পায় শোভনের নাম। ২০১৬ সালে দেখব বাংলাদেশ গড়ব বাংলাদেশ স্লোগানে পায়ে হেঁটে সফর করেন তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ। প্রতিবছর তরুন স্বেচ্চাসেবকদের একটি দল নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেতৃত্ব দেন। প্রতি ৬ ডিসেম্বর ফেনীমুক্ত দিবসে তার নেতৃত্বে এবং তরুন সংঘের সহযোগিতায় একদল তরুন নিয়ে পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করেন ফেনী জেলার একপ্রান্ত থেকে অপর প্রাপ্ত। তার লিখিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- দেখব বাংলাদেশ গড়ব বাংলাদেশ, নিজেকে গড়ে তুলতে, আনফোল্ড ইউর পটেনশিয়াল, লেখাপড়া করে যে ও ক্রিয়েটিভ মার্কেটিং। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত, ব্যক্তিগত ভাবেও বিভিন্ন সামাজিক কাজে অংশ নিয়ে থাকেন।
ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, করোনাকালীন সময়ে নিত্যপণ্য, খাদ্য ঔষধ ও জরুরী সেবা ছাড়াও ডিজিটাল কুরবানি হাট, আমমেলা, লকডাউন এলাকায় পণ্য সরবরাহ, দরিদ্র মানুষকে সহযোগিতা ও অনলাইনে পেঁয়াজ বিক্রিসহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে ই-ক্যাব। এসব ব্যক্তিদের সহযোগিতা ও সূচারু দায়িত্ব পালন ব্যতিত এসব কর্মসূচী সফলতা অর্জন করা সম্ভব ছিলনা।
ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারী আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, জাহাঙ্গীর আলম শোভন করোনাকালীন সময়ে ই-ক্যাব এবং সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য যেভাবে দায়িত্ব পালন করেন তা ছিল অভাবনীয়। দৈনিক ১৬-১৮ ঘন্টা সক্রিয় থেকে কাজ করেছেন কখনো কখনো রাতজেগেও কাজ করতে দ্বিধা করেননি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে গেছেন লকডাউন এলাকায় সেবা তদারক করতে কিংবা ডিজিটাল গরুর হাটের অপারেশন সচল রাখতে। একজন যথাযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে তিনি এই পুরষ্কার পেয়েছেন।
ইকমা এ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ বেগম, সাবেক মহাপরিচালক জাতীয় মহিলা সংস্থা। এনএমএম জিয়াউল আলম, সিনিয়র সচিব, আইসিটি মন্ত্রণালয়। ড. জাফর উদ্দীন, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা। ওবায়দুল আজম, অতিরিক্ত সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এএইচএম সফিকুজ্জমানা, অতিরিক্ত সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মীনা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রেজওয়ানুল হক জামি, হেড অব ই-কমার্স, এটুআই, ড. সালেহ মাহমুদ তুষার, ডিরেক্টর কনসালটেন্ট ওলওয়েল বাংলাদেশ লি.। জনাব সদরুদ্দিন ইমরান, রিসার্চার।