গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ বর্তমান সরকারের একটি অন্যতম অঙ্গীকার। তার একটি কৌশল হতে পারে পল্লী অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারী কৃষক, বিত্তহীন পুরুষ ও মহিলাদেরকে সমবায় সমিতি এবং অনানুষ্ঠানিক দলের মাধ্যমে সংগঠিত করে পুঁজি গঠন, আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকান্ডে প্রশিক্ষণ প্রদান, আর্থিক স্বাবলম্বী ও স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, সম্প্রসারণ কার্যক্রমের মাধ্যমে টেকসই প্রযুক্তি হস্তান্তর, উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ সাধন ইত্যাদি।
এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংক অর্থায়িত কৃষি ঋণের পাশাপাশি সরকারের ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি চালু আছে।
বর্তমানে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণে সরকার ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
দারিদ্র্যমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে লক্ষ্য অর্জনে আমদের প্রামীন উৎপান ব্যাবস্থাকে বিভিন্ন ভাবে মজবুত করতে হবে। পাশাপাশি হাত দিতে হবে বিপণ ব্যাবস্থাপনায়।
কৃষকের উৎপাদিত পন্য দেশে এবং দেশের বাইরে ভোক্তার কাছাকাছি পৌছে দেবার ব্যাবস্থা করা অত্যন্ত জরুরী। কমাতে হবে মধ্যস্বত্তভোগীর সংখ্যা। কৃষক পাবে তার পন্যের প্রকৃত মূল্য আর ভোক্তা পাবে সঠিক মূল্যে পন্য।
আমাদের বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকেও আমলে আনতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর ধারাবাহিক অসামঞ্জস্যতা বাংলাদেশের কৃষির সামনে একটি প্রধান সমস্যা হতে চলেছে। তাপমাত্রার ক্রমবৃদ্ধির ফলে অনেক ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে অন্য দিকে আগাছা, রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে অঞ্চলভেদে সেচের মাধ্যমে আবাদকৃত ফসলের উৎপাদন হ্রাস পাবে যার কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং মাটিতে পানির সহজলভ্যতার পরিবর্তন। ফসলের উৎপাদন গুরুত্বপূর্ণভাবে কমে যাচ্ছে এর কারণ উৎপাদন মৌসুমের স্থায়ীকাল হ্রাস; যার ফলে ফসলের বংশবৃদ্ধি এবং দানা গঠনের ওপর প্রভাব ফেলে। পরিবর্তিত জলবায়ু উপযোগী কৃষি (climate resilient agriculture) বলতে অভিযোজন এবং ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং সর্বস্তরে উপযোগী জীববৈচিত্র্য আনায়ন ইত্যাদি বোঝায় যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে টেকসই কৃষির উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।