ভালো উদ্যক্তা হতে হলে আপনাকে ভালো সেলসম্যান হতে হবে।এর কোনো বিকল্প নেই।
আপনি উদ্যোক্তা হতে চাইছেন? তাহলে দেখে নিন আপনার ভেতর এই ৫টি গুণ আছে কিনা, না থাকলে তা নিজের মধ্যে গড়ে তুলুন।
সেলসম্যানশীপ দারুণ অভিজ্ঞতার মাঝে একটি। একজন এন্টারপ্রেনার কেবল নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য কাজ করেন। সেই সঙ্গে তিনি তার ভবিষ্যৎ জীবনের ল্যান্ডস্কেপকে অঙ্কন করার সুযোগ পান। বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখতে পারেন নিজেকে। চ্যালেঞ্জিং এই পেশায় যেমন থাকে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ। তেমনি থাকে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জনের উপায়।পাশাপাশি থাকে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান করার সুযোগ। একজন সেলসম্যান হিসেবে সফলতা অর্জনের প্রধান ধাপগুলো নিয়ে বিস্তারিত আদি-অন্ত নিচে দেয়া গেলো :
এক. ইতিবাচক মনোভাব : ইতিবাচক মনোভাব একজন সফল বিক্রেতার সফলতা লাভের জন্য প্রধান অস্ত্র। প্রতিদিনের কাজের ধরনগুলো বুঝে সেই অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। একজন সফল সেলসম্যানকে চাপ সহ্য করার মানসিকতা থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে ‘কাস্টমার ইজ অলওয়েজ রাইট’। সেজন্য হাসিমুখে চারপাশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। কাস্টমার ভুল বললেও তার ভুল সংশোধন না করাই ভালো। সেক্ষেত্রে ভিন্ন পন্থায় ভদ্রভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে।
দুই. পেশাগত জ্ঞান : পেশাগত জ্ঞানের সম্পূরক ধারণা থাকা প্রয়োজন। আপনি যে পেশায় আছেন সে পেশার মৌলিক জ্ঞানগুলো আপনাকে জানতে হবে। শিখতে হবে। আপনার পণ্য, প্রতিষ্ঠান, সেলিং সিস্টেম ও সর্বোপরি কাস্টমারের ওপর চাই আপনার প্রাথমিক জ্ঞান। কাস্টমার কেন আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নেবেন? কীভাবে সেই সেবাটা দেবেন? সে জন্য আপনার মনকে আগে থেকে সতর্ক রাখতে হবে। বিভিন্ন ক্রেতার বিভিন্ন প্রশ্ন উত্তরদানে আপনাকে হতে হবে কৌশলী। দেখাতে হবে দক্ষতা।
তিন. ইউনিক সেলিং প্রোপোজিশন : ইউনিক সেলিং প্রোপজিশন হলো যে প্রধান কারণে কাস্টমার পণ্যটি ক্রয় করতে আগ্রহী হবেন। যদি একটি প্রোডাক্টের ৮টি ভালো দিক তুলে ধরেন। সে সঙ্গে দুটি সামান্য ত্রুটিও তুলে ধরুন। আপনার কাস্টমার আপনার বিশ্বস্ত সঙ্গী।
চার. ইউনিক সেলিং স্ট্র্যাটেজি : বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইউনিক সেলিং স্ট্র্যাটেজি আছে। একজন দায়িত্বশীল সেলসপার্সনকে অবশ্যই তার প্রতিষ্ঠান থেকে ইউনিক সেলিংয়ের কোনো স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করা হচ্ছে তা জেনে নিতে হবে। কোনো আপডেট থাকলে স্বেচ্ছায় তার প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তির কাছে জানতে হবে ‘নতুন কোনো আপডেট আছে কিনা’।
পাঁচ. ক্রেতার মনোভাব বোঝুন : কাস্টমারের মনোভাবকে প্রাধান্য দিন। কাস্টমার প্রোডাক্ট সম্পর্কে কি ভাবছেন তা আপনাকে দ্রুত উপলব্ধি করতে হবে। পূর্বের অভিজ্ঞতার আলোকে এ গুণটি আপনাকে অর্জন করতে হবে। মূলত চার প্রকারের কাস্টমার দেখা যায়। এক. প্রোডাক্ট সম্পর্কে যার ধারণা আছে, দুই. প্রোডাক্ট সম্পর্কে যার ধারণা নেই, তিন. প্রোডাক্ট সম্পর্কে নানাবিধ তথ্য নিয়ে যিনি অজ্ঞাত কারণে প্রোডাক্ট ক্রয় করেন না, চার. প্রোডাক্ট প্রতিষ্ঠানের উপর বিরূপ মনোভাবের দরুণ প্রোডাক্ট ক্রয় থেকে বিরত থাকেন। তবে, যিনি প্রোডাক্ট ক্রয় নাও করেন তার সঙ্গে সব সময় ভালো আচরণ করতে হবে। এতে করে কাস্টমার ভবিষ্যতে সেই প্রোডাক্ট ক্রয় করার আগ্রহ প্রকাশ করতে পারেন।
ছয়. টার্গেট পূরণ : টার্গেট পূরণ একটি আর্ট বা শিল্প। সেই শিল্পের জন্য চাই যথাযথ পরিকল্পনা। সে জন্য নিয়মিত ডায়রিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে রাখা উচিত। যাতে করে কোনো প্রকার তথ্য মন থেকে বাদ পড়ে না যায়। টার্গেট পূরণের জন্য চাই— নিয়মিত কাস্টমারদের অভিনব পন্থায় বিরক্ত না করে মুগ্ধ করার প্রক্রিয়া রপ্ত করা। যোগাযোগ রক্ষা করা। নিজের চ্যানেলের
লোকজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক দৃঢ় করা।
সাত. মানানসই পোশাক : পোশাকে একজন সেলসপার্সন থাকবে রুচিশীল। পোশাক, আচরণ ও সংযত কথা হতে হবে মার্জিত ও স্মার্ট। কথাবার্তার সীমা যথাসম্ভব ভদ্রতা বজায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের দিকে। সুতরাং সেলসম্যান হতে হলে এসব দিক মাথায় রাখতে হবে।