শিকদার মঈন উদ্দিন
ব্যবস্থাপনা পরিচালক,শিকদার মঈন লি:,বেলজিয়াম
ঢাকা বিভাগের ঢাকা শহরের হওয়া উচিত অর্থনৈতিক জোন এবং শরীয়তপুর সহ পদ্মার দুই পাড় জুড়ে প্রশাসনিক জোন ।
অনেক আগেই ঢাকা শহর , রাজধানী বা প্রশাসনিক শহর হওয়ার যোগ্যতা বা মান হারিয়ে ফেলেছে। দূষণ , ঘনবসতি , জলাবদ্দ্বতা যানজটসহ অনেক কারণ এজন্য দায়ী । একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের কথা ভাবা মানে সবার আগে একটি উন্নত মানানসই প্রশাসনিক শহর ।
চীরসবুজের এই প্রিয় বাংলাদেশকে আমরা অনেক ভাবেই অলংকৃত করতে চেষ্টা চালাতে পারি। সবার আগে ভাবতে হবে আমাদের প্রকৃতির কথা। আমাদের সাধ আর সাধ্যের কথা।
আজ হোক কাল হোক সে দিন বেশি দুরে নয় যখন ঢাকা শহর থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ( প্রশাসনিক ) কার্যক্রম স্থাপনা স্থানান্তরির করতে হবে অন্যত্র।
অথবা ঢাকা শহরের জনসংখ্যার বড় একটি অংশ স্থানান্তরিত করতে হবে। ভেঙ্গে চুড়ে নতুন করে নির্মান করতে হবে আধুনিক রাজধানী শহর।
কিন্তু সেটা ব্যয় বহুল। সেক্ষেত্রে জনমত পাওয়া যাবে না। পরিবেশের জন্য মারাত্বক ঝুকিপূর্ণ। অধিকাংশ ভূমির মালিকরাই ভূমি ছাড়বে না।
কুয়ালালামপুর একটি আধুনিক শহর হওয়া সত্বেও পুত্রাজয়ায় ন্তুন করে নির্মান করেছে তাদের প্রশাসনিক শহর।এটি একটি নিকটতম উদাহরণ। সে তুলনায় আমাদের ঢাকা শহরের কথা ভাবতে গেলে অনেক আগেই আমাদের নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল নির্মান করা উচিত ছিল।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলির মতপার্থক্য় যতই থাকুক অন্তত এই বিষয়ে সবাই একমত যে সবাই বাংলাদেশের উন্নতি চায়।
সুজলা সুফলা শশ্য় শ্যমলা প্রিয় বাংলাদেশের রাজধানী বা প্রশাসনিক শহর যদি হয় পৃথিবীর প্রথম উদাহরণ ” গ্রীন ক্যাপিটাল ” পূর্ণাঙ্গ একটি পরিবেশ বান্ধব প্রশাসনিক শহর। তাহলে আমাদের সবুজ বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হবে।
ঢাকা থেকে উত্তরে শিল্প নগরী , তার চেয়ে বেশি উত্তরে গেলে সাগর পার থেকে দূরত্ব বাড়ে কেন্দ্র বিবেচনায় এক পাশে হয়ে যায় আর বিকল্প থাকে একটাই তা হলো ঢাকা বিভাগেরই শরীয়তপুরের একপ্রান্ত থেকে পদ্মার দুই পাড়ে এবং বুড়িগঙ্গার আগ পর্যন্ত।
একটি শহর ভেঙ্গে আধুনিক ভাবে পুনরায় নির্মানের চেয়ে একটি নতুন শহর গড়া অনেক সহজ এবং সাশ্রয়ী।
বাংলাদেশের অবকাঠামো এবং ভৌগলিক বিবেচনায় স্থানটি কেন্দ্রে অবস্থিত।স্থলপথ নৌপথ কিংবা আকাশ পথ ,সকল অবকাঠামোগত বিবেচনায় এই এলাকাটি ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন এবং বার্মার কেন্দ্র স্থল।
এখানে নির্মান করা সম্ভব বিশ্বের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ নৌপথ ,মিঠা পানির ওয়াটার টুরিজম , বন্দর , সমুদ্র সংযোগের ব্যবস্থা।
আমাদের নদীমাতৃক দেশের জলভাগ কে আমরা পরিপূন ভাবে ব্যবহার ও উপভোগ করতে পারি।
বাস্তবতার নিরিখে এর স্বপক্ষে হাজার উদাহরণ উপস্থাপন করা সম্ভব আর সম্ভাবনার পরিমান ও ততটাই।
এশিয়ান কানেক্টিভিটির কেন্দ্রস্থল এই এলাকাটি অবহেলার আবরণে ঢেকে রয়েছে। বিশ্বের জন্য একটি বিরল ও একক সম্ভাবনার পথের দেখা ও পায়নি কখনো ।
শরীয়তপুর এর অবস্থান ঢাকার দক্ষিনে হওয়াতে অনন্ত কাল যাবত শরীয়তপুর ঢাকা শহরকে সর্বদাই সরবরাহ করে আসছে বিশুদ্ধ বাতাস আর বিশুদ্ধ পরিবেশ।
শরীয়তপুরের ভৌগলিক গুরুত্ব বিবেচনা না করে তাকে কখনো মাদারীপুর কখনো ফরিদপুর পাঠানো হয়েছিল।
এখন সময় এসেছে সঠিক সিদ্বান্ত নেওয়ার।
একাজটি করতে দেরী হয়ে গেলে দেখা যাবে পদ্মা সেতু হওয়ার সুবাদে অপরিকল্পিত ভাবে নির্মান কাজ করতে থাকবে সবাই। আজকের সিদ্বান্ত দশ বছর বা বিশ বছর পর নিলে এ সকল স্থাপনা নিয়ে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হবে।
শরীয়তপুর জেলায় সবুজ বাংলাদেশের পরিবেশ বান্ধব সবুজ রাজধানী এটা শুধু শরীয়তপুরবাসীর দাবি না এটা সমগ্র বাংলাদেশের দাবি। আগামী দিনের বিশ্ব তাকিয়ে আছে এরকম একটি পরিবেশ বান্ধব রাজধানী শহরের উদাহরণের জন্য।পদ্মানামক মিঠাপানির সাগরের দুই কুল তার একমাত্র ঠিকানা।
এক পাড়ে তার রাষ্ট্রপতির বাসভবন অন্য পাড়ে তার প্রধানমন্ত্রী বাসভবন।