ইভ্যালীকে নিয়ে প্রথম আলোর করা নিউজ এর পর মোটামটি টাইমলাইন ইভ্যালী , ডেসটিনি , পিন ডুয়ো ডুয়ো , এম এল এম , বর্ন টূ লিড , ভালোবাসি ইত্যাদি কি ওয়ার্ড এ ভরে গেছে । এত এত কন্টেন্ট পড়তে পড়তে খুব বিভ্রান্ত হচ্ছিলাম বিধায় একটু লিখতেও মন চাইলো - লেখাটা অনেক বড় তাই একেবারেই ধৈর্যহীন কাউকে না পড়ার জন্যে অনুরোধ করব ।
নিউজ এর ব্যাপারেঃ
নিউজ এ কি লিখলো এবং বাস্তবতা ভিন্ন হতেই পারে , সাংবাদিক তথ্যগত ভাবে কোন কিছু ভুল দিয়ে থাকলে সেটা যেমন ঠিক নয় , তেমনি সাংবাদিক যদি শুধু মাত্র একজন ভোক্তার কস্টকে হাইলাইট করেন সেটাও পত্রিকার এখতিয়ার আছে - মানে পার্থক্যটা নিউজ এর উদ্দেশ্যগত ভাবে - যেমন একটা সময়ে নিউজ পেপার গুলির বিকল্প ছিল কম , মোটামোটি কাগুজে পত্রিকার একটা বিশাল অস্তিত্ব ছিল , প্রভাব ছিল - তখন কার সময়ে খবর বাছা হতো সত্যতা , এলাকার প্রতিনিধির নির্বাচিত খবর ইত্যাদির উপর । কারন যে পত্রিকা যত ডিপ খবর দিতে পারত সে পত্রিকা তত বেশি বিক্রি হত , সেই পত্রিকার তত বেশি এড এর ভ্যালু তৈরি হতো । যেহেতু বিজ্ঞাপন পত্রিকার অন্যতম আয়ের পথ তখন কার নিউজ ছিল কত বেশি গঠন মূলক করা যায় এর উপর ভিত্তি করে । তবে এখন নিউজ মিডিয়া পুরোটায় ভিজিটর নির্ভর হয়ে পড়ছে , মানে যে খবর দিলে মানুষ হাসাহাসি করলেও বা সমালোচনা করলেও ভিজিট করবে শেয়ার করবে সেই নিউজ গুলোর দিকে পত্রিকা গুলি ঝুকে গেছে । এই যেমন কয় দিন আগে একটা ভাল মানের পত্রিকা নিউজ করলো আরেকটি গাধা জন্মালো বাংলাদেশে । পড়ে ভাবলাম যাক আরেকটা গাধা তো বাড়ল । সুতরাং ইভ্যালীকে নিয়ে নিউজ করায় তথ্যগত ভুল থাকলে সেটা আসলেই কাম্য নয় । আবার প্রথম আলো ইভ্যালীকে নিয়ে নিউজ করায় তাদের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য সফল হয়েছে - সুতরাং পলিসি গত দিক দিয়ে অবশ্যই প্রথম আলো ভুল কিছু করেনি । এখানে কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত হিসেবে দেয়া হয়েছে ইভ্যালি এম এল এম , ডেসটিনির কপি ইত্যাদি । একটা পত্রিকা যে কোন বিশেষজ্ঞের মতামত সরাসরি প্রকাশ করতেই পারে এতেও আমার কোন অভিমত নেই । তবে ইকমার্স এসোসিয়েশন বলে যে একটা সত্তা আছে , আইসিটি ডিভিশন বলে যে সরকারের একটা বিভাগ আছে সেটা সম্পূর্ন উপেক্ষা করাও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে মনে হয়েছে আমার কাছে ।
এখন আসি ক্রিটিক্স আর ব্লেইম নিয়েঃ
যে কোন প্রতিষ্ঠান বা ইন্ডাস্ট্রিতে ক্রিটিক্স অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ন বিষয় ক্রিটিক্স দের হিংসুক মনে হলেও তাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানের রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট এর অনেক উন্নয়ন ব্যয় কমে আসে । অনেক ভুল ত্রুটি দ্রুত ধরা পড়ে ইত্যাদি । ইভ্যালীর ও তেমন ক্রিটীক্স থাকতেই পারে - ধরুন ইভ্যালির কর্ম কান্ড নিয়ে আপনার বিচার বুদ্ধিতে কোন কিছু খটকা লাগলো আপনি অবশ্যই জনতাকে সচেতন করতে পারেন , প্রচার করতে পারেন এটা খারাপ হচ্ছে - এতে হয় ইভ্যালী নিজেকে শুধরে নিবে , নাহয় ইভ্যালীর কাস্টমার নিজেকে শুধরে নিবে । দুইটার একটাও না হলেও আপনি হেরে যাচ্ছেন ভেবে আক্রমনাত্বক হবার কোনই দরকার নাই । ধরেন আপনি ঠিক বললেন ইভ্যালি এত অফার দিচ্ছে একসময় অফারের টাকা আর পকেটে না থাকলে পালাবে - এটা ক্রেতারা শুনলো না , ইভ্যালীও চিন্তা করল আমার টাকা শেষ হবেনা । তাহলে আপনার কাজ করার পাশাপাশি মাথায় রাখতে হবে যেদিন আসলেই ইভ্যালী চলে যাবে এবং আপনার কথা ঠিক হয়ে যাবে - তখন আপনার আশে পাশের যে লোভী লোক গুলি ছিল তাদের কে বলতে পারবেন আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম । এখন আপনার হয়ত তার থেকেও বেশি মানুষের উপকার করার ইচ্ছা থাকতে পারে - তাহলে সরাসরি একজন প্রফেশনাল উকিল এর সাথে যোগাযোগ করুন । নিয়ম মেনে ব্যাংক বিভাগ , দুদক , ভোক্তা অধিকার ইত্যাদি অবকাঠামোগত প্রতিষ্ঠান এ অভিযোগ করুন । আপনার ফেসবুক স্টাট্যাস তো আর দেশের ১৮ কোটি মানুষ কে রিচ করবেনা । সুতরাং আপনি নিজেকে ক্রিটীক্স মনে করলে প্রপার ওয়েতে করতে হবে ।
এখন মনে করেন ইভ্যালী যদি আগামী মাসে ওয়াল্মার্ট থেকে ১০ মিলিয়ন ডলারের একটা ইনভেস্টমেন্ট পেল তাহলে যে ভর্তুকি তারা দিয়েছে , বা যে ক্যাশ ক্যাপিটাল তারা খরচ করেছে তা ব্যাকাপ করা কি খুব কস্টকর বলে মনে হয় আপনার ? ( যদিও আমার আগের পোস্ট এ আমি বলেছিলাম - এই ইনভেস্টমেন্ট পাবার পরিবেশ তৈরি থেকে ইভ্যালী অনেক দূরে অবস্থান করছে) । সুতরাং তখন কিন্তু এখন কার যারা টীভি ফ্রিজ কিনেছেন আপনার নাকের ডগা দিয়ে তারাই লাভবান । আবার তখনো আপনি হেরেছেন এমন না - আপনি যে লোভ করেন নি এটাই আপনার চরিত্র গত দিক দিয়ে একটা পজিটিভ ভাইভ এনে দিবে ।
এখন আসি ব্লেইম নিয়েঃ ধরুন আপনি কোন খবর জানেন না , ডাটা নাই মানুষের কাছে লাভের অংশ শুনেই মনে হলো এটা ভেগে যাবে - আপনি বলে দিলেন এটা এম এল এম - আপনি হয়ত এম এল এম কিভাবে হয় তাই জানেন না । আবার ধরুন কোন একটা কোম্পানি অল্প টাকা দিয়ে শুরু হয়েছি আপনি বললেন এরা ফকির এত টাকা আয় করবে কেন - টাকা মানি লন্ডারিং করে ( ডাটা না থাকলে সেটা ব্লেইম) । ক্রিক্টীক্স যেমন সচেতনতা তৈরি করে ব্লেইম তেমন একটা কোম্পানির পাব্লিক পার্সেপশন এ বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে - সেটা আপনার প্রচার মাধ্যমের উপর ভিত্তি করে ।
এখন আসি ইভ্যালীর এই ব্যাপারে বিভিন্ন বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তি ও সেই ব্যাপারে আমার অভিমত -
১। সাপ্লাই চেইন উন্নতি করন করে লাভঃ এই ব্যাপারটা আমার মাথায় কোন ভাবেই আসছে না যে বাংলাদেশের সাপ্লায় চেইন এ ইভ্যালী কি ধরনের পরিবর্তন এনেছে - ইভ্যালীর বক্তব্য হচ্ছে তাদের কারনে ম্যানুফ্যাকচার থেকে সরাসরি ক্রেতা পন্য পাওয়ায় ম্যানুফ্যাকচার দের ইনভেন্টরি কস্ট কম হচ্ছে । বাংলায় ধরলাম গোডাউন এ আর প্রোডাক্ট রাখা লাগছে না , দোকানে আর সেলস কর্মী রাখা লাগছে না । এবং এজন্যই ইভ্যালীকে তারা অতন্ত্য কম মূল্যে পন্য দিচ্ছেন যার কারনে ১০০% ক্যাশ ব্যাক করলেও তাতে তাদের তেমন কোন গচ্চা যাচ্ছে না । এখন দেশীয় একজন ক্রেতা হিসেবে আমি জানতে চাই কোন ম্যানুফ্যাকচারার তার ইনভেন্টরি বন্ধ করেছেন বা স্পেস কমিয়েছেন - ধরুন এফ ডি এল স্যামস্যাং কি তার নায়ারায়ন গঞ্জের যে ইনভেন্টোরি ছিল তা সংকীর্ন করেছে ? বা বসুন্ধরা সিটিতে তাদের একটা স্টোর ছিল সেটা বন্ধ করেছেন , বা সেখান কার সেলস ম্যান ছাটায় করে দিয়েছেন ?
আপনাদের কি মনে হয় জানিনা তবে স্যামসাং এটা করেনি - করার সম্ভাবনা তখনই তৈরি হবে যখন এ দেশের ইকমার্স ৩.২% থেকে বেড়ে অন্তত ৩০% রিটেইল মার্কেট শেয়ার অধিকার করবে । সুতরাং এই ইনভেন্টরি কস্ট কমানো বা সাপ্লাই চেইন এ বিল্পব আনার ব্যাপারটাতে আমার প্রশ্ন রয়েছে । তবে সরাসরি ইভ্যালি কিভাবে লাভ করে সেটা জানার মত অথোরিটি আমি নই সুতরাং এব্যাপারে আমার অভিমত থাকতে পারে তবে ব্লেইম নেই ।
২। পিন ডুয়ো ডুয়ো তত্ত্বঃ আমাদের দেশের আবেগী জনতা খুব সহজেই একবার এমাজন , একবার আলিবাবা , আবার পিন ডুয়ো ডুয়ো যখন যার সাথে পারেন তুলনা করতে ছাড়েন না - প্রথমেই পিন ডুয়ো ডুয়োর ব্যবসায়িক মডেল দেখি তারা একই আইটেম এর নির্দিষ্ট অর্ডার হলে পন্য ফ্যাক্টরিতে দিয়ে বানিয়ে আনবেন এবং তা ডেলিভারি করবেন এই মডেল এ ব্যবসা করেন । পিন ডুয়ো ডুয়ো চাইনাতে আবার বলছি সেটা চাইনাতে মানে বুঝেন নাই আবার পড়েন পিন ডুয়ো ডূয়ো চাইনাতে অবস্থিত সেখানে আপনি বাসার আশে পাশে যেমন শপিং মল পান তেমন ফ্যাক্টরি পাওয়া যায় , সুতরাং অর্ডার নাও , এক্সিকিউটিভ কে দিয়ে ফ্যাক্টরিতে অর্ডার দাও ( বা সিস্টেম দিয়ে সরাসরি অর্ডার দাও ) পন্য রেডি হয়ে গেল ডেলিভার করে দেন । এখন এই মডেল এর সাথে ইভ্যালী কি করে ম্যাচ করবে মাথায় আসছে না - এদেশের সুই থেকে শুরু করে হাগু করার পট পর্যন্ত বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয় । তাহলে ইম্পোর্ট ছাড়া কি করে সরাসরি ম্যানুফ্যাকচার টূ কঞ্জিউমার মডেল স্থাপিত হবে তাও মাথায় আসে না । এখন ধরলাম চায়নার ফ্যাক্টরিতেই অর্ডার করে নিয়ে আসে তাহলে ইম্পোর্ট ট্যাক্স ইত্যাদির ঝামেলার পর কি আদেও ১০০% ক্যাশ ব্যাক দিয়েও লাভ করা সম্ভব ? বাংলাদেশের ইকমার্স এ চাইনা বেইজড বা ইউ এস এ বা জার্মান বেইজড কোন ইকমার্স তুলনা দিলেই খালি মাথা ঘুরে আমার । আপনার কি মনে হয় বাইক গুলি এফ যেড , বাজাজ ইত্যাদি সব টংগী তৈরি হয়ে আপনার কাছে আসে ? মোটেই না - কোন না কোন শো রুম বা ইম্পোর্টার ই ইভ্যালীর সেলার হিসেবে কাজ করে । এখানে বাজাজ কি ইভ্যালীর সেলার । কিংবা বাজাজ কে কি ইভ্যালী সরাসরি অর্ডার দিচ্ছে ?
৩। স্টক ক্লিয়ারেন্স তত্ত্বঃ মানে ধরুন বে , বা বাটা তার জুতায় ৭০% ছাড় দেয় ঐ টাইপ - এখন ৫০% ডিস্কাউন্ট এ মাল কেনা আর ১০০% ক্যাশ ব্যাক এ মুল মূল্যে মাল কেনা এক । এক্ষেত্রে ১০০% পর্যন্ত ইভ্যালী কঞ্জিউম করতে পারবে - কিন্তু ১৬০% ২০০% ইত্যাদি গুলি অবশ্যই মার্কেটিং পলিসির মদ্ধ্যেই পড়ে হয়ত । কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই ক্লিয়ারেন্স এর জুতা কেমন হয় তা তো আমরা জানিই । আদেও কি ইভ্যালী তেমন কোন পন্য দিচ্ছে ?? উত্তর হচ্ছে না - ইভ্যালী বাটার শো রুমে বিক্রি হচ্ছে এমন জুতাতেই অফার দিচ্ছে এবং মানুষ জন সেগুলা দাম যাচাই করেই অর্ডার দিচ্ছে । এখন মনে হতে পারে সাইট এ ২০% দাম বাড়িয়ে তার পর অফার দিচ্ছে - এতেও কি এই সাব সিডি কভার করে ? অথবা শুধু শুধু ক্লিয়ারেন্স এর মাল দেয়া কি সেবার মানের জন্য প্রশ্ন বোধক নয় ?
৪। টাকা খাটানো তত্ত্বঃ ইভ্যালী নাকি গ্রাহকের টাকা নিয়ে সেটা ম্যাসে ২০% সুদে টাকা খাটীয়ে লাভ করে বিশাল এক অরাজক ব্যাপার করে তারপর পন্য দিচ্ছে । এটা একটা ডাহা ব্লেইম - দুনিয়ার কোন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান কি আদেও আছে যারা এত অল্প সময়ে এত লাভ দিবে ?
৫। দেশী উদ্যোগঃ এই ব্যাপার টা ঠিক দেশের একটা প্রপার ইকমার্স জায়ান্ট থাকা আমাদের জন্য অতন্ত্য সুখকর ব্যাপার হবে । কিন্তু সেই ইকমার্স প্রতিষ্ঠান দেশিয় ম্যানুফ্যাকচারিং এর প্রতি কোন প্রকার মনোযোগ দিচ্ছে কিনা সেটা বিবেচ্য - মানে এমন অফার দিলে ভাল হতো - দেশে তৈরি ইটে ৩০০% ডিস্কাউন্ট তাইলে সেটা দিয়ে গ্রামে একটা বাড়ি বানাতে পারতাম । চাইনাই আর ইন্ডিয়ায় তৈরি পন্য দেশে বিতরণ করে তা কিভাবে সরাসরি দেশীয় উদ্ভাবনীয় উদ্যোগ হিসেবে অনেক বেশি সমীহ পাবে সেটাও ভাবার বিষয় । এখানে পুরো উদ্যোগটা একটা সার্ভিস প্লাটফর্ম মাত্র ।
৬। অর্ডার হাতে রাখা তত্ত্বঃ অনেকে বলছেন ইভ্যালি আসলে কেউ যদি পন্য না নেই তখন লস এ পড়বে এজন্য কিছু অর্ডার বাড়তি নেই এবং সেই বাড়তি অলারা ভুগে । কিন্তু আসলে ইভ্যালী যেহেতু সরাসরি অনলাইন এ পেমেন্ট নেই তাই তাদের সেই লসের বা অযুহাতের সুযোগ নাই ।
এখন আসি ইভ্যালির মত মার্কেটপ্লেস গুলির দেশি আর বিদেশীতে পার্থক্যঃ
ওইযে আলিবাবা , আলি এক্সপ্রেস , এমাজন , পিন ডু ডুয়ো ইত্যাদিতে সরাসরি ম্যানুফাকচার সংযুক্ত তারাই তাদের স্টোর পরিচালনা করে । ওখান থেকে এদেশ বা ভারতের পার্থক্য হচ্ছে - এখান কার সেলার রাও বরং পারলে আলিবাবা থেকে বাল্ক এ এনে সিঙ্গেল সিংগেল আমাদের দেশের মার্কেট প্লেস এ সেল করে । মানে সেই চাইনা থেকে এনে বা ইউ কে , ইউ এস এ থেকে এনেই বেচে । সুতরাং দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানের আর্থিক টার্ন ওভার দুই রকম এমাজন বেজস কে দুনিয়ার সেরা ধনী বানাতে পারলেও ফ্লিপকার্ট কিন্তু ল স লসেই (সার্চ গুগল) সুতরাং দুই ধারার দুই ব্যবসাকে নিয়ে আর দুই ধারার দুই মালিক কে নিয়ে তুলনা করবেন না । ইভ্যালীও যদি ফ্লিপকার্ট বা জিও এর মত লস দিয়ে ব্রান্ডিং চালাই , মার্কেটিং পলিসি চালাই - আমার কোন সমস্যা নাই । কিন্তু আমাদের দেশের ইকমার্স কোম্পানি গুলোর মূল রেভিনিউ পয়েন্ট আসলে সেবা , কমিশন , এড ইত্যাদি । সেদিক দিয়ে -
১। ডেল্ভারি সেবার মানঃ এই সেবার মান জিনিসটা আপেক্ষিক ব্যাপার - ধরুন আপনি ক্রিকেট ফাইনাল দেখবেন এর টিকিট কাটতে আপনি স্টেডিয়াম এ লাইন ধরেছেন - আপনি যে ওয়েট করছেন আপনি জানেন ও না কতক্ষন লাগবে - কিন্তু তাও আপনার ভালই লাগবে - কিন্তু যেই দেখবেন আপনার সামনে এসেই টীকিট শেষ - তখন আপনার আগের সময় টুকুকে দুই বছর মনে হবে , টিকেট গিভিং সিস্টেম কে ডিসগাস্টিং মনে হবে । সুতরাং এই সেবার মান নির্ভর করে গ্রাহকের মতামতের উপরে । এখন সকল সেবার মত ডেলিভারি সেবাতেও সেটা থাকবে - আর যেহেতু এখানে লাইন দেবার মত ব্যাপার না - পন্যের সংখ্যাও জানা যাইনা তাই আপনি ১০ দিনে পন্য পেলে টিকেট পাবার মত ইয়াহু ফিলিংস হবে , আবার যে পাচ্ছেনা - বা অনেক দেরি হচ্ছে তার ঐ সময় টুকুকে আযাব মনে হচ্ছে - আপনার ইয়াহুকে যেমন এই আযাব অলারা সম্মান করছেন আপনি তাদের প্রতি সহানুভুতি দেখাতে হবে । যারা প্রথমে পান তারা পরে যারা কাউ কাউ করছেন তাদেরকে লোভি বলেন দেখা যায় - মানে উনি যেহেতু পেয়েছে তাই উনি আসলে ডিস্কাউণ্ট এর আশায় অর্ডার করেন নি ডিস্কাউন্ট ওনার ঘাড়ে অটো চেপে বসেছে । ইভ্যালী শুরু থেকেই ডেলিভারি তে উন্নতি করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে । যখন প্রতিশ্রুতি ফেইল করছে তখন নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ করে প্রতিশ্রতি দিচ্ছে । এভাবে চলতেই আছে - কিন্তু বাস্তব ভাবে যদি ইভ্যালির ডেলিভারি সেবার মান উন্নত হয়ে যায় - আসলেই কি তাদের এই সেবার সমতুল্য আর কেউ আছে মার্কেট এ ? সুতরাং ইভ্যালীর নিজেকে প্রমানের জন্য এই ডেলাভারি টাইম আর ডেলিভারি কমিট্মেন্ট অতিশীঘ্রই ঠিক করা উচিত । না হলে এরকম নিউজ করার সুযোগ থেকেই যাবে - আর মানূষ ও ভয়ে বিশ্বাস করবে । শুধু মাত্র আপেক্ষিক ভাবে সেবা পাওয়া মানূষ দের লাইক আর কমেন্ট এ আশস্ত্ব হয়ে গেলে সেটা বরং হীতে বিপরীত হতে পারে ।
কমিউনিকেশন এর মানঃ ইভ্যালীর কাস্টমার কেয়ার উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি ও অনেক আগের । তাদের এই ব্যাপার টা নিয়ে তেমন কোন অগ্রগতি আমার চোখে পড়েনা - কাস্টমার ফোন দিবে , কাস্টমার কেয়ারের কাছে সিস্টেম এ যথাযথ তথ্য থাকবে এবং তারা সেটা দেখে রিপ্লে দিবে এটা সেট না করেই মার্কেট এ এসে নিজেদের সেরা বলা আবার সেরা বলার পাশাপাশি পাসে থাকার জন্য অনুরোধ করাও আমার ব্যক্তিগত ভাবে বোধগম্য নয় ।
সেলার ম্যানেজমেন্ট এর মানঃ ইভ্যালির সেলার হতে হলে ক্রেডিট থাকার যোগ্যতা থাকতে হবে , ডেলাভির করল কি করলনা এটা নিয়ে ফলোআপ এর ব্যবস্থা থাকতে হবে , সেলার ভুল করলে তাকে ব্যান করার ব্যবস্থা থাকতে হবে । এরকম সেলার উন্নয়নে ইভ্যালি অনেক কাজ করছে তবে তা ইফেক্টিভ কিনা সেটা নিয়ে তারা কোন ভাবে চিন্তিত বলে মনে হয়নি ।
যাই হোক ইভ্যালীর ব্যবসায়িক পলিসি বা প্লান ইভ্যালী সরাসরি পাব্লিকলি বলবেনা এটাও আমার কাছে স্বাভাবিক । আমার যদি তাদের কোন লিগ্যাল ইস্যু নিয়ে কন্সার্ন কখনো হয় এবং আমার যদি তেমন ইচ্ছা থাকে আমি দেশের আইন কানুন অনুযায়ি যতটুকু জানা যায় বা জানানো যাই সেটা তে ট্রাই করব । আইন এ দোষ থাকলে ইভ্যালী ভুগবে , না থাকলে ইভ্যালী ভাল করবে এতে সমস্যার কিছুই দেখিনা । তবে সেবার মান ঠিক রেখে ইভ্যালি যদি তার ব্যবসা চালাতে পারত বা পারে তবে সেক্ষেত্রে তারা অবশ্যই ভাল করবে ।
আমি একজন ইন্ডাস্ট্রি মেট হিসবে ইভ্যালীর ইনভেস্ট মেন্ট গ্রাউন্ড নস্ট হয় এরকম কোন ব্লেইম দেখতেও চাই না । ইভ্যালী মানুষের পন্য দিতে এস এল এ টাইম এর থেকে বেশি সময় নিচ্ছে তাও দেখতে চাইনা । আমি ইভ্যালি কি নিয়ে সমালোচনা হবেনা এটাও চাইনা । যাচাই করার বা অভিযোগ করার সুযোগ থাকলেও সরাসরি নিজস্ব পার্সেপ্সশন পাব্লিক্লি পত্রিকাতে উঠে আশুক তাও চাইনা ।
আমি আমার দেশের ইকমার্স ইডাস্ট্রিকে সুস্থ্য অবস্থায় দেখতে চাই । আমার মনে হয় যেকোন কোম্পানির তাদের রেভিনিউ মডেল এপ্রুভালের একটা সার্টিফিকেশন নিয়ে আসা উচিত যাতে ফুট ফাট কাউকে এম এল এম বলে দোষ না দেয়া যায় । একটা কোম্পানি তার রেভিনিউ মডেল এর বাইরে আর কোন মডেল সংযুক্ত করলেই নতুন সার্টিফিকেট নিতে হবে এরকম আরকি । মানে বাংলালিংক কালকে ইকমার্স করতে চাইলে সেখান কার রেভিনিউ মডেল সার্টিফিকেশন নিবে এরকম আরকি ।
সংগৃহীত