নিজস্ব প্রতিনিধি : গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কুঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের দাবি এবং দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে কুঋণের পুরো অর্থ অবলোপন করে হিসাব থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ব্যাকিং কার্যক্রম প্রায় বন্ধ থাকায় খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা।
জানা যায়, খেলাপি ঋণের পরিমাণ ভয়াবহ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলায় তা দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি হয়ে আছে। দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ অবলোপন (রাইটঅফ) করাতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে তারা এ প্রস্তাবও দিয়েছে। খেলাপি হওয়ার পর অবলোপনের জন্য তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়। ব্যাংক মালিকেরা এ সময় কমিয়ে দেড় বছর করার জন্যও বলেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক তা বিবেচনায় রেখেছে বলে জানা যায়।
খেলাপি ঋণের ৬৬ শতাংশই ১০ ব্যাংকের কাছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের মধ্যে মন্দ অর্থাৎ শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ৮৯ শতাংশ। বাকিটা নিম্নমানের শ্রেণিকৃত ও সন্দেহভাজন শ্রেণিকৃত ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, খেলাপি ঋণের বিপরীতে দেশের ব্যাংকগুলোর ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রভিশন সংরক্ষণ করা দরকার ছিল। কিন্তু তা হয়নি। ব্যাংকগুলো ৮১ হাজার কোটি টাকা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়। ৩৪ হাজার কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতি থাকায় অর্থনীতিতে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে। দেখা যায়, দেশের বেসরকারি খাতের ১০টি ব্যাংক নির্ধারিত হারে ঝুঁকিবাহিত সম্পদ অনুপাত (সিআরএআর) সংরক্ষণ করতে পারেনি। ব্যাংকিং কর্মকান্ডে গতিময়তা না আসার এটাও কারণ। বিদ্যমান পরিস্থিতির উত্তরণে গত ফেব্রয়ারিতে ঋণ অবলোপন নীতিমালায় শিথিলতা আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলেই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। বরং খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।