অনলাইন ডেস্কঃ বিড়ালের জগতে পার্সিয়ান এতটাই জনপ্রিয় যে বহু নামজাদা মানুষও পোষ্য হিসেবে তাদের গ্রহণ করতে পিছপা হননি। এর মধ্যে প্রথমেই আসবে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলর নাম।
পার্সিয়ান বিড়াল
আদি বাসস্থান: যে কোনও প্রজাতির বিড়ালেরই জন্ম কোথায়, তা নিয়ে নানা রকম তত্ত্ব চলতে থাকে। পার্সিয়ান বিড়ালও তার ব্যতিক্রম নয়। নামের কারণে অনেকেই মনে করেন, এই বিড়ালের জন্মস্থান আসলে পার্সিয়া বা বর্তমানের ইরান। কিন্তু খুব পাকাপোক্ত প্রমাণ এর পিছনে পাওয়া যায় না। তবে ইউরোপে এই প্রজাতির বিড়াল আসে পিয়োত্রো দেল্লা ভালে নামের পর্যটকের হাত ধরে। ১৬২০ সাল নাগাদ পিয়েত্রো এশিয়া, আফ্রিকার কিছু এলাকা এবং পূর্ব ইউরোপের বেশ কিছু জায়গা ঘুরে ইতালিতে এসে পৌঁছন। তিনিই তখন সঙ্গে করে এই প্রজাতির বিড়ালটি নিয়ে আসেন। তাই মনে করা হয়, ইরান না হলেও আফ্রিকা, এশিয়া বা পূর্ব ইউরোপের কোনও এলাকাই এই বিড়ালের আদি বাসভূমি। ইউরোপে এসে পৌঁছনোর পরেই রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে পড়ে এই বিড়াল। ক্রমশ নানা মানুষের পোষ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায় এটি। ইউরোপ থেকে পৌঁছে যায় আমেরিকাতেও।
প্রথম প্রদর্শনী: বিড়াল নিয়ে এখন প্রচুর প্রদর্শনী হয়। কিন্তু এর রেওয়াজ খুব পুরনো নয়। বরং কুকুরের প্রদর্শনীর অনেক পরে শুরু হয়েছে বিড়ালের প্রদর্শনী। পিয়েত্রোর সূত্রে ইউরোপে এসে পৌঁছনো পার্সিয়ান বিড়াল নিয়ে প্রথম বার বিড়ালের প্রদর্শনী হয় লন্ডন শহরে। সেটাও ইউরোপে এসে পৌঁছনোর প্রায় ২৫০ বছর পরে। সবিড়ালের সেই প্রদর্শনীতে শুধুমাত্র পার্সিয়ান বিড়ালই ছিল প্রধান আকর্ষণ। এই প্রজাতি ছাড়াও সেখানে সায়ামিজ, স্কটিস ওয়াইল্ড ক্যাট জাতের বিড়াল ছিল। ১৮৭১ সালে ক্রিস্টাল প্যালেসের সেই প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ২০০০ দর্শক। এই প্রদর্শনীর পরে ইউরোপ জুড়ে পার্সিয়ান বিড়ালের চাহিদা দ্রুত বাড়তে থাকে।
আমেরিকা আগমন: বিংশ শতকের গোড়ার দিকে এই পার্সিয়ান বিড়াল আমেরিকায় এসে পৌঁছয়। মার্জার-প্রেমীরা ইউরোপ থেকে এই প্রজাতির বিড়াল নিয়ে যান আমেরিকায়। পৌঁছেই রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে পড়ে এটি। এখন আমেরিকায় যত পোষ্য বিড়াল রয়েছে, তার মধ্যে সিংহভাগই পার্সিয়ান বিড়াল।।
বিখ্যাত পার্সিয়ান: বিড়ালের জগতে পার্সিয়ান এতটাই জনপ্রিয় যে বহু নামজাদা মানুষও পোষ্য হিসেবে তাদের গ্রহণ করতে পিছপা হননি। এর মধ্যে প্রথমেই আসবে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলর নাম। গোটা জীবনে প্রায় ৬০টি বিড়াল পুষেছিলেন তিনি। যার মধ্যে অধিকাংশই পার্সিয়ান প্রজাতির। তবে তাদের মধ্যে আবার সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল একজন। বিশালাকার সেই পার্সিয়ান বিড়ালের নাম ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল রেখেছিলেন মিস্টার বিসমার্ক। মেরিলিন মনরোর পোষ্য পার্সিয়ান বিড়ালও রীতিমতো জনপ্রিয়। তার নাম ছিল মিতসোউ। শোনা যায়, আমেরিকার িবখ্যাত লেখক রেমন্ড চ্যান্ডলার নাকি নিজের সমস্ত উপন্যাস প্রথমে পড়ে শোনাতেন তাঁর পোষ্য বিড়ালকেই। সেই পার্সিয়ান বিড়ালটির নাম ছিল টাকি। ভারতেও বহু সেলিব্রিটি পার্সিয়ান বিড়ালের মালিক। সেই তালিকায় রয়েছেন আলিয়া ভাট থেকে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের মতো অনেকেই। আলিয়ার পোষ্য দুই পার্সিয়ান বিড়ালের নাম শিবা এবং পিকা। জ্যাকলিনের পোষ্যর নাম মিউ মিউ। শিল্পা শেঠি নিজে একজন প্রাণীঅধিকার রক্ষা কর্মী। এবং তিনি নিজেও পার্সিয়ান বিড়ালের মালিক। মনীষা কৈরালাও পার্সিয়ান বিড়ালের মালিক।