গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষকদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস পরীক্ষার ‘জি র্যাপিড ডট ব্লট’ কিট পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ৩০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) ওষুধ প্রশাসন থেকে চিঠি দিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে তা জানানো হয়েছে বলে জানান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) অথবা আইসিডিডিআরবির যেকোনো একটিতে পরীক্ষা করার কথা বলেছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ইতোমধ্যে বিএসএমএমইউর উপাচার্যকেও চিঠি দিয়েছে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কিট পরীক্ষার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করতে হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ইতোমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বিএমআরসির একটি বড় কমিটি আছে। কমিটির সদস্যরা বৈঠক করে এই আবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবেন। মৌখিকভাবে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আজকে অনলাইনে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, যেহেতু অনেক বড় কমিটি তাই সবাইকে অনলাইনে এক করতে পারেনি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে তারা জানিয়েছে আগামী ২/১ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
গণস্বাস্থ্যের করোনা কিট পরীক্ষা নিয়ে গত কয়েকদিনের বিতর্কের পর এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বলে জানান জানান ডা. জাফরুল্লাহ।
নানা টানাপোড়েনের পর করোনাভাইরাসজনিত (কোভিড-১৯) রোগ শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ওষুধ প্রশাসন থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক চিঠি দিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে তা জানানো হয়েছে।
এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও।
“হ্যাঁ, আমাদের কিট পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) অথবা আইসিডিডিআরবি’র যে কোন একটিতে পরীক্ষা করার কথা বলেছে। তবে আমরা বিএসএমএমইউতে এই কিট পরীক্ষা করব।”
বিএসএমএমইউর উপাচার্যকেও চিঠি দিয়ে অধিদপ্তর ইতিমধ্যে বিষয়টি জানিয়েছে বলেও জানান ডা. জাফরুল্লাহ।
গত শনিবার ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে কিটের নমুনা মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-সিডিসিকে হস্তান্তর করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তাতে সরকারের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও কেউ যায়নি।
এরপর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রর পক্ষ থেকে কিট পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও তা গ্রহণ করেনি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এরপর ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, অধিদপ্তর জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে। ক্ষোভের সুরে বলেছিলেন- “গত ৪৮বছরে গণস্বাস্থ্য কাউকে ঘুষ দেয়নি, দেবে না। গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত কীট পরীক্ষা করতেও কাউকে ঘুষ দেব না। কিন্তু লড়াই করে যাব।”
কিন্তু জাফরুল্লাহর এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতে থাকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এসবের মধ্যেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট পরীক্ষার অনুমতি দিল ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ করোনাভাইরাস শনাক্তের এই কিট উদ্ভাবন করেছেন। এর নাম ‘র্যাপিড ডট ব্লট’।
উদ্ভাবকদের দাবি, এই পদ্ধতিতে মাত্র ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যাবে।