সেপ্টেম্বরের মধ্যে করোনাভাইরাস (কোভিড–১৯) রোগের ২ কোটি ভ্যাকসিন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। প্রতি ডোজের ভ্যাকসিন তৈরিতে এক হাজার রুপি খরচ পড়তে পারে পুনেভিত্তিক কোম্পানিটি জানিয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছে সেরাম। ২৩ এপ্রিল মানুষের শরীরে অক্সফোর্ডের সেই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা পৃথিবীজুড়ে করোনা মোকাবিলায় আশা সঞ্চার করেছে।
বিশ্ববিখ্যাত ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদার পুনাওয়ালা বলেন, ‘ভারতে আক্রান্ত কয়েক শ ব্যক্তির ওপর মে মাস থেকে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করতে পারব বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি। ট্রায়াল সফল হলে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ এই ভ্যাকসিন বাজারে আনা হবে। ভ্যাকসিনটি একটি সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা। এটি এক হাজার রুপির মতো, যা মূলত আমাদের উৎপাদনের খরচ।’
পুনাওয়ালা মনে করেন, বৈশ্বিক বাজারের চেয়ে ভারতে কভিড ভ্যাকসিনের দাম কমই ধরা হবে। কারণ হাম, বসন্ত এসব রোগের ভ্যাকসিনের দাম এমনিতেই ভারতে অনেক কম। যুক্তরাজ্যের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ কম।
তিনি আরও বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে ট্রায়াল শেষ হবে, এরপর আমরা উৎপাদনে যাব-ততদিন পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করতে চাই না। নিজেদের ঝুঁকি ও ব্যয়ে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। একদম এককভাবে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আগামী ছয় মাস গড়ে ৪০ থেকে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন তৈরি করা আমাদের লক্ষ্য। ট্রায়ালের সফলতার ওপর ভিত্তি করে আমরা মাসে ১ কোটি পর্যন্ত ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারব। তবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ ২ কোটি থেকে ৪ কোটি ভ্যাকসিন আনতে পারব আমরা। যদি এই ভ্যাকসিন সফল হয়, তাহলে ভারতসহ বিশ্বের আরও অনেক দেশের জন্য আমরা এই ভ্যাকসিন তৈরি করব।’
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত দুই লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে ৩০ লাখের কাছাকাছি। কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন না থাকায় পৃথিবীবাসীর জন্য বড় ধরণের হুমকি এই কভিড-১৯। এর সংক্রমণের গতি রোধ করতে না পারলে অর্থনৈতিক মন্দা, দুর্ভিক্ষসহ নানা সংকটের আশঙ্কার কথা বলেছেন জাতিসংঘের সংস্থাগুলো ও বিশেষজ্ঞরা।
এর মধ্যে চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, জার্মানিসহ অনেক দেশের বিজ্ঞানীরা হন্য হয়ে কভিড ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ করে চলেছেন। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনটি মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হয়েছে। এই গবেষণায় বিশ্বের যে সাতটি প্রতিষ্ঠান যুক্ত, এর মধ্যে রয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটও।