প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে সমবায়কে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে বলেছেন: দেশের বিদ্যমান সমবায় আইনটি যুগোপযোগী করতে তার সরকার পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন: সমবায় আইনটি সত্যিই খুব পুরনো আইন। এই আইনটা যুগোপযোগী করা দরকার। তাই সমবায় ক্ষেত্রটিকে কৃষকের জন্য অধিক লাভজনক করতে আমরা ইতোমধ্যেই কিছু কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও বিষয়টি আমি দেখবো।
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে ওয়াকার্স পার্টির সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেননের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: সমবায় আইনটি যুগোপযোগী করতে পারলে উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার সাথে সাথে আমরা জনগণের খাদ্যপুষ্টিও নিশ্চিত করতে সক্ষম হব। আর রপ্তানি পণ্যে আমরা খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পকেও গুরুত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন: সমবায় করে সেটা যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায় তবে, সকলেই লাভবান হবে। তবে, একটা কাজ করতে হবে জমির যারা মলিক তাদের উদপাদিত পণ্য বা লভ্যাংশের একটি অংশ থাকতে হবে। শ্রমিকরা একটা অংশ পাবে। আর সমবায় চালানোর জন্য একটা অংশ সরকারের কাছে আসতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন: এটাই জাতির পিতা করতে চেয়েছিলেন। আর এটা সুচারু রূপে করা গেলে বাংলাদেশের কৃষকদের আর দুঃখ থাকবে না।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন: আমাদের সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদে যে অর্থনৈতিক নীতিমালা রয়েছে সেখানে সরকারী, সমবায় এবং বেসরকারী তিনটি খাতকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সমবায় পদ্ধতি আমাদের দেশে বলবৎ রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন: জাতির পিতা যেভাবে গ্রাম সমবায় গড়ে তুলে দেশের অর্থনীতিকে আরো উন্নত করতে চেয়েছিলেন, দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করেছিলেন সেটা হয়নি।
তিনি বলেন: আমাদের দুর্ভাগ্য জাতির পিতাকে হত্যার পর আর সেটা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তিতে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা আর সেদিকে যায়নি।
‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পটি তার সরকারের একটি সমবায় ভিত্তিক প্রকল্প উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন: সেখানে তাদের উৎপাদিত পণ্যটা সমবায়ের মাধ্যমেই বাজারজাত করা হচ্ছে।
তিনি এসময় বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে খাদ্যা প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন: সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করলে হবে না, বেসরকারি উদ্যোক্তা ও আমাদের সৃষ্টি করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন: সমবায়টা আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য। কেননা আমাদের লোকসংখ্যা অতি বেশি এবং যখনই পরিবার বাড়ে বা পরিবারের মধ্যে ভাগ হয় ঐ চাষের জমিও ভাগ হতে থাকে। কাজেই সমবায়ের মাধ্যমে চাষ করে পণ্য বাজারজাত করতে পারলে আমাদের কৃষকরা আরো লাভবান হবে।