সিদ্ধান্ত আগেই জানানো হয়েছিল। গত ১৫ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিল, ২০ এপ্রিল থেকে একাধিক ক্ষেত্রে লকডাউনের নিয়মকানুন কিছুটা শিথিল করা হতে পারে। শনিবার মন্ত্রি পরিষদের বৈঠকে সেগুলি চূড়ান্ত হল। কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে, তার তালিকা প্রকাশ করল কেন্দ্র।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহর বাড়িতে জরুরি বৈঠকে বসে বিশেষ মন্ত্রিপরিষদের। বৈঠকে রাজনাথ সিংহ ছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন, রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানী, তথ্য মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের মতো মন্ত্রীরা ছিলেন।
যে সব ক্ষেত্রে লকডাউনের নিয়মকানুন শিথিল করা হয়েছে, সেগুলি টুইট করে জানান রবিশঙ্কর প্রসাদ। তবে এই ছাড় অবশ্যই ‘নন হটস্পট’ অর্থাৎ যে সব এলাকায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ নেই, সেই সব এলাকার জন্য। এবং সেই সব এলাকাতেও অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রায় সব ক্ষেত্র উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আয়ুষ সহ সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্র চালু করা যাবে।
সমস্ত কৃষি বিষয়ক কাজকর্মে কোনও বাধা থাকছে না সোমবার থেকে। অর্থাৎ রবিশষ্য কাটা এবং ঘরে তোলায় আর কোনও বাধা থাকছে না। পশুপালনকেও রাখা হচ্ছে এই তালিকায়।
সোমবার থেকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অফিসগুলিও খুলছে। তবে সেখানেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বন্দোবস্ত করতে হবে।
মাছ ধরার ক্ষেত্রেও তুলে নেওয়া হচ্ছে লকডাউনের নিয়ম। জানানো হয়েছে, সমুদ্রে বা নদী-পুকুরে মাছ ধরায় কোনও বাধা থাকছে না। মাছ চাষের ক্ষেত্রেও আর কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না।
পশ্চিমবঙ্গে চা-কফি চাষে আগেই লকডাউনের নিয়মকানুন কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতেও চা-কফির সঙ্গে রবার চাষে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
লকডাউনের মধ্যেও ব্যাঙ্কগুলি চালু ছিল। সোমবার থেকে তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে ঋণদানকারী বা আমানতকারী সংস্থাগুলিও।
১০০ দিনের কাজে ছাড়ের কথা বলা হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের ঘোষণায়। মন্ত্রিগোষ্ঠী তাতে সিলমোহর দিয়েছে। তবে জমায়েত যাতে না হয় নজর রাখতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
জনপরিষেবায় বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হচ্ছে সোমবার থেকে। অর্থাৎ টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহের মতো পরিষেবা পুরোপুরি চালুর কথা বলা হয়েছে।
আন্তঃরাজ্য ও রাজ্যের ভিতরে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহণ, লোডিং-আনলোডিংয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহেও থাকছে না কোনও বাধা।
সরকারি-বেসরকারি শিল্প ও শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলতেও আর কোনও বাধা থাকছে না সোমবার থেকে। ছাড় দেওয়া হচ্ছে নির্মাণ শিল্পেও।
ব্যাক্তিগত গাড়ি রাস্তায় নামার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী আনতে যাওয়া আনা, অফিস যাওয়া-আসার মতো উপযুক্ত কারণ দেখাতে হবে।
লকডাউনের কারনে স্কুল-কলেজ বন্ধ। অধিকাংশ স্কুলে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। সেই ব্যবস্থাকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে এ দিনের মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে।