মোখলেছুর রহমান
ইদানীংকালে অনেকেরই মাথায় ট্যুরিজমের পোকাটা ঢুকেছে। সব বয়সের, সব পেশার মানুষ বেশ আক্রান্ত হচ্ছেন এর দ্বারা। আলোচনায় মেতে উঠেছেন সবাই। বেশ সমজদারের মতো একে নিয়ে ভালো ভালো কথা বলছেন, এর ভবিষ্যত নিয়ে বক্তৃতাও করছেন সরকারের নানা কর্তাব্যক্তি, গুণীজন, শিক্ষক, সাধারণ মানুষ এমনকি সাধারণ যাদেরকে আমরা মনে করি তেমন কিছু বুঝেন না তারাও। কারণ অনেকেই আজকাল ট্যুরিজম বুঝার জন্য চেষ্টা করছেন।
পত্র পত্রিকা, রেডিও টেলিভিশন বা সামাজিক গণমাধ্যমে আজকাল ট্যুরে যাওয়ার বেশ বিজ্ঞাপন লক্ষ্য করা যায়। দেশে-বিদেশে নানাধরণের সুযোগ সুবিধা সম্বলিত দলীয় গাইডেড ট্যুরের বিজ্ঞাপন। দেশে কত ট্যুর অপারেটর তা কারো জানা নাই। এদের সাথে অনেক মানুষ ট্যুরে যাচ্ছেন। ফলে অনেক মানুষের ট্যুরিজম সম্বন্ধে বেশ একটা ধারণা হচ্ছে। বিদেশে দামি ট্যুর করাটাকে কেউ কেউ স্ট্যাটাস সিমবল বলেও মনে করেন। আরো মজার বিষয় হলো এখন অনেকের ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন এই বিষয়ে পড়ালেখা করছেন।
এমন অনেকে আছেন, যারা পর্যটন বিষয়ে পড়ালেখা না করে কিংবা কিছুটা ট্রেনিং নিয়ে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্যুরিস্ট কোচ, ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, হজ¦ এজেন্ট ইত্যাদিতে চাকুরি করছেন। অনেকে সফলতার সাথে এই বিষয়ক ব্যবসা করেন। অন্যদিকে অনেকে এইসব তাঁকিয়ে তাঁকিয়ে দেখছেন এবং ভাবছেন: কী হচ্ছে এসব! সব মিলিয়ে সমাজ এখন কেমন যেন ট্যুরিজমের সাথে জড়িয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশের জিডিপিতে ২০১৯ সালে ৭৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার অবদান রাখছে ট্যুরিজম, কর্মসংস্থান দিয়েছে সাড়ে ১৮ লক্ষ মানুষের এবং পর্যটন রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে হঠাৎ করে ট্যুরিজম এই অবদান রাখবে এটা আমরা অনেকেই ভাবি নাই। বাংলাদেশের মানুষ ভ্রমণে টাকা খরচ করবে, এই শিল্পে কাজ করবে এবং বিদেশি পর্যটকরা এদেশে বেড়াতে আসবে - এসব আমাদের চিন্তায় নতুন খোড়াক যোগাচ্ছে বৈকি! অর্থনীতির এই নতুন বাঁক আমাদেরকে নতুন মহাসড়কের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ট্যুরিজমের সাথে সম্পৃক্ত সরকারের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারি, মন্ত্রী-আমলা এবং অন্যান্য অনেক মানুষ এর সাথে পথ চলছে। এত মানুষ যার সাথে চলে, তার পোকা মাথায় না ঢোকে কি পারে?
ট্যুরিজমের পোকা দুই ধরণের। এক ধরণের পোকা রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়ার (যারা বাতাস থেকে ধরে নাইট্রোজেনকে মাটিতে জমা করার) মতো যারা মানুষের মাধায় ইতিবাচক বুদ্ধি যোগায়। আরেক ধরণের পোকা ঘুঁনপোকার মতো সব বুদ্ধিগুলোতে কেটেকুটে নষ্ট করে দেয়। আমাদের মাথায় এর দুটোই ঢুকেছে। তাই ট্যুরিজম নিয়ে ভিন্ন ও বিপরীত মতের অভাব নাই। যিনি যেভাবে পারছেন, ট্যুরিজমের উপর সওয়ার হচ্ছেন এবং বলছেন, উপদেশ দিচ্ছেন, আদেশও দিচ্ছেন। ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ, বিশেষত তরুণরা। তারা বুঝতে পারছেন না, কী করা উচিত, কী উচিত নয়। ট্যুরিজমের কোন পথ কার জন্য প্রযোজ্য। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অহরহ ভুল হচ্ছে। খোঁদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে ট্যুরিজম পড়ানো হচ্ছে, সেখানেও তারা তরুণদের মাথায় ছেড়ে দিচ্ছেন ট্যুরিজমের ঘুঁনপোকা। অপ্রায়োগিক ও অসম্পূর্ণ কারিকুলাম বানাচ্ছেন, অযতনে পড়াচ্ছেন এবং ফলে শিক্ষার্থীরা পথের সন্ধান পাচ্ছেন না। উদাহরণ দিলেই পরিস্কার হবে: আমাদের দেশের অনেকগুলো বিশ^বিদ্যালয় ৭০% কোর্স ট্যুরিজম বহির্ভূত বিষয় এবং মাত্র ৩০% কোর্স ট্যুরিজমের সাথে সম্পৃক্ত পড়িয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি দিচ্ছে। আর প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ট্যুরিজম বলতে হোটেলকেই বুঝানো হচ্ছে। ভাবটা এরকম যে, হোটেলই ট্যুরিজমের মূল গন্তব্য। এই সকল ভাবনা আমাদেরকে কোথায় নিয়ে যাবে কে জানে!
বিদ্যালয়গুলো স্বাধীন, তবে কী বিষয় নিয়ে পাঠদান করবে সে বিষয়ে স্বাধীনতা না দেখানোই ভালো। মত বিনিময়ের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের চাহিদা নিরূপণ করে ট্যুরিজম শিক্ষার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা জরুরি। শিক্ষার মান নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এক্রিডিটেশনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তার সাথে ট্যুরিজম কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে ট্যুরিজম বিষয়ে শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিতদেরকে লাইসেন্স প্রদান করে একটি মানসম্মত পেশাজীবি শ্রেণি প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত দরকারি। কারণ, এটা জাতির জীবন-মরণের সাথে জড়িত।
আমাদের তরুণরা কী ভাবছেন? জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা ১৬ থেকে ২৯ বছরের তরুণদেরকে যুবা বলছে, যারা পৃথিবীর মোট পর্যটকদের প্রায় ২৩%। বিশ্ব পর্যটনে তাদের একটি শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে। এদের চোখে অফুরান স্বপ্ন, উদ্ভাবন, জয় ছিনিয়ে নেবার আকাঙ্খা এবং মুখে দীপ্তির হাসি ও বুকে বল নিয়ে এরা দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলে। তাদের জীবনধারায় পর্যটনের মতো জীবনধর্মী কর্মকান্ডকে স্বাগত জানানোর কথা। একে বুকে ধারণ করে নতুন পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে মর্যাদাশীল মানুষরূপে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কথা। তা-ই কি হচ্ছে? তারা কি সে পথে এগোচ্ছেন? নাকি ট্যুরিজমকে না জানার জন্য ঘুঁনপোকার দংশনে নির্বাসনে যাচ্ছেন?
যারা ট্যুরিজম নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন ডিপ্লোমা, ডিগ্রি ও মাস্টার্স ডিগ্রি ইত্যাদি লেখাপড়া করছেন, তাদের অনেকের সাথে আমার কথা হয়। আমার কেন যেন মনে হয়, এদের অনেকের মাথায়ই ট্যুরিজমের ঘুঁনপোকার বাস। নিজেদেরকে হতাশার জালে জড়িয়ে নিরাশ করছে। এরা ভাবছে অন্যরা আমাদের চেয়ে ভালো। ট্যুরিজমকে এদের ধারণ করার কথা। কিন্তু ঘটছে তার বিপরীত ঘটনা। ধারণ করছে না এবং অন্যদেরকে ট্যুরিজমের বিশাল জগৎ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। লক্ষ্য করেছি, তিনটি কারণ আছে এর পিছনে: প্রথমত যারা পড়াচ্ছেন, তারা একে ধারণ করেন না; দ্বিতীয়ত যে পরিবেশে পড়ানো হচ্ছে, সেখানে এর উপর ধারণা পরিস্কার না থাকার জন্য এদেরকে ভুল ধারণা দেওয়া হ্েচ্ছ এবং তৃতীয়ত এদের বাড়ির পরিবেশ-প্রতিবেশ থেকে এই বিষয়ে পড়ার জন্য সমাদৃত হচ্ছে না। রাষ্ট্রের উচিত সমাজের এই সকল জায়গায় অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা এবং টেকসই সামাজিক সমাধান খোঁজা।
সাধারণের পাশাপাশি রাষ্ট্রের মাথায়ও ট্যুরিজমের পোকা বেশ বাসা বেধেঁছে। তবে কোন ধরণের পোকার পরিমাণ কত, তা নির্ণয় করা কঠিন। আবার এই পোকারা ঠিক কাদের মাথায় বাসা বেধেঁছে, তা-ও নির্ধারণ করা সহজ নয়। তবে আনন্দের বিষয় মন্ত্রী, এমপি, আমলা সবাই বলছেন এর সাথে রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার কথা। কেন যেন মনে হয় বুঝে, দায়িত্ব নিয়ে, ভালোবেসে বলছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম। আবার কেউ কেউ নিজের দূর্বল অবস্থানকে সবল করার জন্য বেশি বেশি বলছেন। তাতে যে তিনি ভুল বলছেন এও বুঝছেন না। এ নিয়ে কেউ কেউ হাসাহাসি করছেন, অন্যরা ভুল তথ্য পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে খুব ফলপ্রসু কিছু হচ্ছে না। কারণ, গত ২ দশকে ট্যুরিজমের জন্য রাষ্ট্রের কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আমি যদি বলি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এর শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। কী উত্তর পাবো, জানিনা। এরূপ মজার খেলা চলছে ট্যুরিজমের পোকার বদৌলতে।
কিছু কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, ট্যুরিজমের পোকা মাথায় না ঢুকলে ২০১১ ও ২০১৬ সরকার পর্যটনবর্ষ ঘোষণা করতো না; ২০১৩ সালে ট্যুরিস্ট পুলিশের সৃষ্টি করতো না। পর্যটনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ, টেকনাফে সাবরাঙ প্রকল্প গ্রহণ, সোনাদিয়া বিশেষ অর্থনৈতিক ট্যুরিজম জোন তৈরি, সরকারি বেশ কিছু বিশ^বিদ্যালয়ে ট্যুরিজমে উচ্চশিক্ষা চালুসহ উচ্চমাধ্যমিক ও ডিপ্লোমা স্তরে ট্যুরিজম শিক্ষা বাস্তবায়ন করা ইত্যাদি মোটেও হতো না। কিন্তু সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যে সকল আমলা-কর্মচারিগণ এসবের দায়িত্বে, তারা উদাসীন, নির্বিকার। দীর্ঘসূত্রিতার জন্য ট্যুরিজমের কলেজে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, ডিপ্লোমা স্তরে শিক্ষক নিয়োগ না করে এবং পাঠ্যবই ছাড়া গত চার বছরে ছেলেমেয়েদেরকে হেনস্তা করা হলো! এখন দরকার অবিলম্বে এর মানোন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের। তা না হলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আমাদের ট্যুরিজম মুখ থুবড়ে পড়বে। তা নিয়ে উন্নয়নের সকল যুদ্ধযাত্রা ব্যর্থ হবে।
ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম পোকা বেশি করে উৎপাদন করা দরকার। তা না হলে ঘুঁন পোকাদের মোকাবেলা করা যাবে না। এ জন্য তরুণদেরকে মুক্তমন নিয়ে, গাঁ ঝাড়া দিয়ে, সৃজনশীলতার ব্রত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং পর্যটনের সাথে নিজেদেরকে যুক্ত করতে হবে। শিক্ষা গ্রহণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, মানসিক দৃঢ়তা এবং ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পথে নামতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে, এ বিপ্লব সৃষ্টির, আনন্দের ও উন্নয়নের। এটি কোন পক্ষপাতদুষ্ট বা রাজনৈতিক মতাদর্শের নয় বরং সর্বজনীন।
রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যক্ষভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশে প্রত্যেকটি দূতাবাসে একজন করে ট্যুরিজম এটাচি দিয়ে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে প্রমোশনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। বিদেশি পর্যটকদেরকে আকৃষ্ট করার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে দেশের বিশেষজ্ঞ, গবেষক, ট্যুর অপারেটর, হোটেল মালিক, ট্রাভেল এজেন্টসহ প্রয়োজনীয় যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিতে হবে। যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে এসে ক্রীড়া পর্যটন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে স্বাস্থ্য পর্যটন, রেল মন্ত্রণালয়কে রেল পর্যটন, কৃষি মন্ত্রণালয়কে কৃষি পর্যটন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা পর্যটন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে কমিউনিটিভিত্তিক গ্রাম পর্যটন, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়কে জলাভূমি পর্যটন, শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে শিশু পর্যটন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ভাষা পর্যটন, উৎসব পর্যটন, জীবনধারা পর্যটন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে মুক্তিযুদ্ধ পর্যটন ইত্যাদিতে প্রণোদনা দিতে হবে। পর্যটন মন্ত্রণালয়কে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে হবে, অর্থ মন্ত্রণালয়কে অর্থের যোগান ও আইন মন্ত্রণালয়কে আইনি সহায়তা দিতে হবে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে আইনের মাধ্যমে প্রদত্ত ম্যান্ডেটগুলোকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, পর্যটন কোন একটি মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। সকলের কাজের মধ্যে যতটুকু পর্যটন পড়ে, ততটুকুই বাস্তবায়ন করতে হবে।
আমরা চাই দেশে একটি পর্যটন অর্থনীতি গড়ে তুলতে। ট্যুরিজমের কাছে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আগামী দিনে অর্থনীতি, উন্নয়ন কিছুই টেকসই হবে না, টিকবে না। তাই সকলের মাথায় ট্যুরিজমের রাইজোবিয়াম জাতীয় পোকার ব্যাপক প্রবেশ এবং ঘুঁনপোকাদের ধ্বংস কামনা করছি। রাইজোবিয়াম জাতীয় ট্যুরিজম পোকাকে প্রয়োজনে সকলের মাথায় ইনোকুলেশন অর্থাৎ জোর করে প্রবেশ করানো দরকার। রাষ্ট্র, বুদ্ধিজীবি, গবেষক, মন্ত্রী, আমলা, আর্মি, পুলিশ ও সাধারণ মানুষ সকলের মাথা থেকে ট্যুরিজমের ঘুঁনপোকাদেরকে মেরে ফেলতে হবে। বুদ্ধির গোঁড়ায় নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার সরবরাহ করে সবুজ পর্যটন সৃষ্টির কোন বিকল্প দেখি না।