জাতিসংঘ, অক্সফ্যামের পরে এ বার বিশ্ব ব্যাঙ্ক। করোনার জেরে তৈরি হওয়া আর্থিক পরিস্থিতিতে দারিদ্র বাড়তে পারে বলে সতর্ক করল তারাও। জানাল, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গত কয়েক বছরে যাঁরা দারিদ্রসীমার উপরে উঠে এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই ফিরে আস্তে পারেন ওই সীমার নীচে। বিশেষত লকডাউনে শহরে কাজ বন্ধ বলে পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হওয়ায় তাঁদের ক্ষেত্রে ওই আশঙ্কা আরও বেশি। ফলে আগামী দিনে বাড়বে বৈষম্যও।
সেই সঙ্গে বিশেষ করে ভারতের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে বিশ্ব ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস, করোনার ধাক্কায় চলতি অর্থবর্ষে (২০২০-২১) দেশের বৃদ্ধির হার নেমে আসতে পারে ১.৫-২.৮ শতাংশে। যা নব্বইয়ের দশকে উদারীকরণের পরে সব চেয়ে কম। আর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বৃদ্ধি হতে পারে ১.৮%-২.৮%। যা ৪০ বছরে সর্বনিম্ন।
গত সপ্তাহেই জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বলেছিল, করোনার জেরে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দেশ ভারতে চরম দারিদ্রের খাদে গড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার মুখে দাঁড়িয়ে অন্তত ৪০ কোটি মানুষ। দ্রুত দরিদ্র দেশগুলির পাশে না-দাঁড়ালে, বিশ্বে আরও ৫০ কোটির বেশি মানুষ অসহনীয় দারিদ্রের মুখে পড়বেন বলে সতর্ক করেছিল অক্সফ্যামের রিপোর্ট। একই সুরে সাউথ এশিয়া ইকনমিক ফোকাস রিপোর্টে বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির প্রথম কাজ সংক্রমণ রোখা। তার পরে দ্রুত দাঁড়াতে হবে গরিব মানুষের পাশে। না-হলে মানুষকে দারিদ্রসীমার উপরে তুলে আনার চেষ্টা বিফল হবে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের দক্ষিণ এশিয়ার মুখ্য অর্থনীতিবিদ হান্স টিমার বলেন, ভারতের আর্থিক পূর্বাভাস ‘ভাল নয়’। তাই এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের
মতোই সরকারকে জোর দিতে হবে সকলের কাছে খাবার পৌঁছনো, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য স্থানীয় ভাবে কাজ তৈরি, ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করার উপরে। বাণিজ্যের নিয়ম শিথিল করে পণ্য যাতায়াত সহজ করতে হবে। দেখতে হবে যাতে ছোট সংস্থা দেউলিয়া না-হয়। তিনি জানান, এ ভাবে কাজ করলে সব দিক দিয়েই এগোবে ভারত।