ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীর জন্য থাকে একটি সিট বা কক্ষ। কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর জন্য ছিল দুটি কক্ষ। একটি থাকার আর অন্যটিতে পড়াশোনা করতেন তিনি। তবে দুটি কক্ষেই শেখ মুজিবের চেয়ে বেশি থাকতেন তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীরা। বেকার হোস্টেলের ঐতিহাসিক কক্ষ দুটি এখন বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ।
ভারতবর্ষের রাজনীতির ইতিহাস যেমন বেকার হোস্টেলকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত কলকাতার তালতলার লাল রঙের বাড়িটি আরো বেশি স্মরণীয় করেছেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
গোপালগঞ্জ থেকে ১৯৪২ সালে প্রবেশিকা পাশ করে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন শেখ মুজিব। শুরুতে বোনের বাড়িতে থেকে কলেজ করলেও ১৯৪৫-১৯৪৬ শিক্ষাবর্ষে আবাসিক ছাত্র হিসেবে ওঠেন বেকার হোস্টেলে।
১৯৯৮ সালে ২৪ নম্বর কক্ষটি সংরক্ষণ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয় ২৩ নম্বর কক্ষটিও। ২৪ নম্বরে থাকা আর ২৩ নম্বর কক্ষে পড়াশোনা করতেন তিনি।
এই স্মৃতিকক্ষে বঙ্গবন্ধুর পড়ার চেয়ার-টেবিল, কাঠের আলমারি ও খাট রয়েছে আগের মতই। বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সম্প্রতি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে মার্বেল পাথরে তৈরি তার আবক্ষ ভাস্কর্য। এখানে আসতে হলে বাংলাদেশিদের অনুমতি নিতে হয় কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস থেকে। আর ভারতীয়সহ অন্যদের অনুমতি নিতে হয় কলেজ অধ্যক্ষ বা হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্টের কাছ থেকে।
বিশেষ দিন ছাড়া এ কক্ষে যেতে পারেন না বেকার হোস্টেলের আবাসিক ছাত্ররা। তাই এখানে আসার নিয়ম সহজের দাবি ছাত্র ও স্থানীয়দের।
বাঙালির ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেকার হোস্টেল। আর এই স্মৃতিকক্ষ তাদের দিচ্ছে শেকড়ের সন্ধান।