তিনি বলেন, আমার আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এরদোয়ান সব কেড়ে নিয়েছে। এমনকি স্বাধীনতা, কথা বলা এবং কাজ করার অধিকা রটুকুও
জীবন কখন কাকে কোন সংগ্রামের মুখোমুখি দাঁড় করায়, কারও জানা নেই সে খবর। ছিলেন মাঠ কাঁপানো স্ট্রাইকার, নিজ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ফুটবল বিশ্বকাপে, ২০০২ জাপান-কোরিয়া বিশ্বকাপের দ্রুততম গোলটিও এসেছিল তার পা থেকে। অথচ সময়ের ব্যবধানে তিনি এখন উবার চালক। বলা হচ্ছে, তুরস্কের ফুটবলার হাকান শুকুরের কথা।
একটি জার্মান গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে ৪৮ বছর বয়সী সাবেক এই ইন্টার মিলান স্ট্রাইকারের জীবনের এই অস্বাভাবিক ছন্দপতনের কথা।
২০০৮ সালে ফুটবল থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে নামেন তিনি। ২০১১ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ এরদোগানের ডানপন্থী দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টির মনোনয়নে একটি সংসদীয় আসন থেকে বিজয়ী হন।
কিন্তু তুর্কি ইসলামি পণ্ডিত ফেথুল্লাহ গুলেনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার অভিযোগে এরদোগানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুকুরকে পার্লামেন্ট থেকে সরে যেতে হয়। প্রভাব পড়ে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রমেও। এরদোগানের চক্ষুশূল হয়ে শেষপর্যন্ত আর দেশে থাকা হয়নি সাবেক এই ফুটবলারের। পরিবার-পরিজন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। কাজ নেন উবার চালক হিসেবে।
তিনি বলেন, “আমার আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এরদোয়ান সব কেড়ে নিয়েছে। এমনকি স্বাধীনতা, কথা বলা এবং কাজ করার অধিকারটুকুও।”
দেশ ছাড়ার পরেও তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে এরদোগান প্রশাসন।
শুকুরের দাবি, এরদোগান সরকার তার তুরস্কের সব বাড়ি, ব্যবসা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে। তাই বাধ্য হয়েই তিনি বিদেশে পাড়ি জমিয়ে এই পেশা বেছে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, তুরস্ক জাতীয় দলের হয়ে ১১২ ম্যাচে ৫১ গোল করা এই স্ট্রাইকার সংখ্যা বিবেচনায় দেশটির সর্বকালের সেরা গোলদাতা।
১৯৮৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন তুরস্কের গ্যালাতাসারে, ইতালির ইন্টার মিলান ও ব্রিটেনের ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের মতো ক্লাবে।