বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার
আগামী ৩১ মে পর্যন্ত বিল পরিশোধে ব্যর্থ কোনো ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি বা জরিমানা আদায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১৫ মার্চ-পরবর্তী সময়ে কোনো ব্যাংক যদি গ্রাহকদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করে থাকে, তা-ও গ্রাহককে ফেরত দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ থেকে গতকাল জারি করা এক সার্কুলারে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সুরক্ষা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ নির্দেশনা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশসহ বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগের বিস্তার ও সংক্রমণের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়েছে। ফলে জনগণের আয় বাড়ে এমন কর্মকাণ্ডের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। কভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া এ সময় গণপরিবহন ও জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সীমিত আকারে জরুরি ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ক্রেডিট কার্ডের অনেক গ্রাহকই নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ করতে পারবেন না উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই নির্দেশনায় বলা হয়, এ অবস্থায় ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের আর্থিক সামর্থ্য ও চলমান অন্যান্য সীমাবদ্ধতার বিষয় বিবেচনায়, যেসব গ্রাহকের বকেয়া বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ১৫ মার্চ বা তার পরে, সেসব গ্রাহক যথাসময়ে বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার ওপর কোনো বিলম্ব ফি, চার্জ, দণ্ড সুদ, অতিরিক্ত মুনাফা বা অন্য কোনো ফি (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) আরোপ না করার নির্দেশনা প্রদান করা হলো। যদি কোনো ব্যাংক ১৫ মার্চের পর এরই মধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে জরিমানা বা অন্য কোনো ধরনের ফি আদায় করে থাকে, তা গ্রাহককে ফেরত দেয়া অথবা পরবর্তী সময়ে প্রদেয় বিলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
গত ১৫ মার্চ থেকে কার্যকর এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, এর আগে এ বছরের ১৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটের মধ্যে জানুয়ারি থেকে আগামী জুন পর্যন্ত কেউ ঋণের কিস্তি না দিলেও তাকে খেলাপি না করার বিষয়ে সার্কুলার জারি করা হয়। ওই নির্দেশনায় ব্যাংকগুলো থেকে নেয়া সব শ্রেণীর গ্রাহককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সে হিসেবে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকরা জুন পর্যন্ত বিল পরিশোধ না করতে পারলে তাকে খেলাপি করা যাবে না। নতুন করে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জরিমানা ফি মওকুফের নির্দেশনা দেয়া হলো।