লকডাউনের জেরে আজকাল রোজ বাজার-দোকান করা সম্ভব হচ্ছে না। সুরক্ষা হেতুই প্রতি দিন বাড়ি থেকে বেরতে নিষেধ করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে বেশ কিছু জিনিস তিন-চার দিনের মতো কিনে সংরক্ষিত করে রাখতে হচ্ছে। দুধ, পাঁউরুটি-সহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও তাই একটু বেশি করে কিনে রাখাটা জরুরি হয়ে পড়ছে।
কিন্তু শুধু কিনলেই তো হবে না। কী ভাবে সে সব সংরক্ষণ করবেন, তা না জানলে জিনিসটি ব্যবহারও করতে পারবেন না, অর্থও অপচয় হবে। কিছু সব্জি ও খাবার আছে, যা বেশি দিন টাটকা রাখা মুশকিলের। ফ্রিজেই রাখুন বা বাইরে, প্রতিটা জিনিসেরই সংরক্ষণ করার কিছু নিয়মকানুন আছে।
কোন কোন উপায়ে কী কী সংরক্ষণ করলে কেনা জিনিস নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না, রইল সে সবের হদিশ।
দুধ: ডিপ ফ্রিজের নীচে যে ট্রে থাকে, তাতে রাখুন দুধের প্যাকেট। পাঁচ দিন দুধকে টাটকা রাখতে পারে এই ট্রে। পুরনো নকশার ফ্রিজ হলে সরাসরি ডিপ ফ্রিজেও ভরে রাখতে পারেন দুধের প্যাকেট। তবে দুধ কেনার আগে অবশ্যই এর এক্সপায়ারি ডেট দেখে কিনবেন।
পাঁউরুটি: দু’-এক দিনের জন্য পাউরুটি টাটকা রাখতে চাইলে বাইরের তাপমাত্রায় রাখুন। তবে বেশি দিনের জন্য ভাল রাখতে চাইলে ফ্রিজে মজুত রাখুন তা।
• খুব গরমের দিনে ফ্রিজে রাখুন পাউরুটি। সাধারণ দিনে দিন দু’য়েকের জন্য রাখলে বাইরের তাপমাত্রায় রাখুন।
• প্যাকেট থেকে খুলে ব্রাউন পেপারে মুড়ে বা ব্রেড বক্সেই মজুত রাখুন পাউরুটি। এতে মেয়াদ না ফুরনো অবধি টাটকা থাকে তা।
• ব্রাউন পেপারে মুড়ে রাখলে খুব শক্ত করে প্যাকেটের মুখ বাঁধুন।
ক্যাপসিকাম, টম্যাটো ও ব্রকোলি: দিন চারেকের জন্য রাখতে চাইলে বাইরেই রাখতে পারেন এদের। তবে দিন সাতেকের জন্য সংরক্ষিত করতে চাইলে মানতে হবে কিছু নিয়ম। ক্যাপসিকাম ও ব্রকোলিকে মাঝারি টুকরো করে কেটে নিন। টম্যাটোকে চার টুকরো করে কেটে নিতে হবে। এর পর একটা প্লেটে এই কাটা সব্জিগুলো এমন ভাবে রাখুন যেন একটার উপর একটা টুকরো না থাকে। প্লেটটি চাপা দিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। ভাল থাকবে সব্জি।
কাঁচা লঙ্কা: কাঁচা লঙ্কা ভাল রাখতে চাইলে একটি কাগজে মুড়ে ফ্রিজে রেখে দিন। তবে এই ভাবেও দিন চারেকের বেশি ভাল রাখা কঠিন। কাঁচালঙ্কার সঙ্গে নুন মিশিয়ে তাকে মিক্সিতে বেটে নিলে যে লঙ্কাবাটা পাবেন, তাকে সংরক্ষণ করা সহজ। কোনও এয়ারটাইট কৌটোয় এটি রেখে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে টাটকা থাকবে বহু দিন।
গাজর: ছোট ছোট টুকরো করে কেটে, ফুটন্ত গরম জলে ২ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এ বার ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখুন মিনিট পাঁচেক। এরপর একটা প্লেটে কাটা টুকরো পর পর সাজিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রেও লক্ষ রাখতে হবে, যেন একটার উপর আর একটা টুকরো না থাকে।
পালং শাক: ফুটন্ত গরম জলে দু’মিনিট ফুটিয়ে অথবা ব্লাঞ্চ করে, ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখুন। এর পর ভাল করে জল নিংড়ে, শাক কেটে একটি এয়ারটাইট কৌটোয় ভরে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। ভাল থাকবে দিন সাতেক।
ধনে পাতা: ভাল করে ধুয়ে, জল শুকিয়ে নিতে হবে প্রথমেই। এর পর অল্প পরিমাণে পাতা ভাগ করে কয়েকটা পেপার টাওয়েল অথবা খবরের কাগজে মুড়ে ভাগে ভাগে প্যাক করতে হবে।
আলু্: ফ্রিজে রাখার ভুল করবেন না একে। তার চেয়ে ফ্রিজের নীচে যে বাড়তি খাপ দেওয়া থাকে তাতে আলু রাখুন। বাজারের ঝুড়িতে খোলা হাওয়াতেও রাখতে পারেন তা। তবে অন্যান্য সব্জির সঙ্গে না রেখে আলুর জন্য আলাদা একটা ঝুড়ি বরাদ্দ করুন। তাতে ভাল থাকবে বেশি দিন।