মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিসহ প্রায় ১০,০০০ অভিবাসী শ্রমিক করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে সংস্থাটি এই বিদেশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের আহবান জানিয়েছে। শুক্রবার নিজেদের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
এতে বলা হয়, মালদ্বীপের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, ২৭ মার্চ পর্যন্ত দেশটিতে পাঁচ করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন পর্যটক ও একজন তাদের নাগরিক যিনি সম্প্রতি বৃটেন থেকে ফিরেছেন। কিন্তু আক্রান্ত আরো দুই ব্যাক্তিই মালদ্বীপে কাজ করা বিদেশি শ্রমিক। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১০,০০০ অভিবাসী শ্রমিক রয়েছে। এরমধ্যে শতকরা ২৫ ভাগই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আশঙ্কা করছে, অভিবাসী শ্রমিকদের জীবন যাপনের ধরণের কারণে তারা সবাই বড় ধরণের করোনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
তাদেরকে একই রুমে অনেকের সঙ্গে শেয়ার করে থাকতে হয়। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশও এমন যে চাইলেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়।
মালদ্বীপের সংবিধান অনুযায়ী, দেশটিতে কাজ করা সকল অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ইন্স্যুরেন্স নিশ্চিতে বাধ্য কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই নিয়ম রক্ষা করা হচ্ছে না। বেশিরভাগ শ্রমিক জানেনই না তাদের এই ইন্স্যুরেন্স রয়েছে। অপরদিকে শ্রমিকদের নিয়োগদাতারাও অবৈধভাবে তাদের কাগজপত্র আটকে রাখে। ফলে তাদের পক্ষে এই সাস্থ্য সেবা নেয়া আরো কঠিন হয়ে পড়ে। এতে করে অভিবাসীরা বাধ্য হয় সাধারণ নাগরিকের তুলনায় অধিক অর্থের বিনিময়ে সেবা নিতে। এরমধ্যে সবথেকে ভয়াবহ অবস্থা যেসব শ্রমিক অবৈধ উপায়ে দেশটিতে কাজ করে যাচ্ছে।
অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য মালদ্বীপ আলাদা একটি হাসপাতাল খুলেছে। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আশঙ্কা করছে, সমগ্র দেশ থেকে শ্রমিকরা এসে এই এক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারবে না। তাই মানবাধিকার সংস্থাটি আন্তর্জাতিক অভিবাসী শ্রমিক অধিকার চুক্তির শর্ত মেনে মালদ্বীপকে এসকল করোনা ঝুঁকিতে থাকা বিদেশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের আহবান জানায়। সংস্থাটি জোর দিয়ে বলে, অভিবাসী শ্রমিকরা যাতে যে কোনো হাসপাতালে গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে মালদ্বীপ সরকারকে অবিলম্বে সে ব্যবস্থা করতে হবে।