যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। ২৭ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাতে জরিপ পর্যালোচনাকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটার এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৫১৪ জন। এর মধ্যে এক হাজার ৫৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই হাজার ৪৬৫ জন।
আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে ইতোমধ্যেই ইতালি, চীন ও স্পেনের মতো দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ, দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে।
ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৪৯৮। সরকারি হিসাবে, চীনে এ সংখ্যা ৮১ হাজার ৩৪০। স্পেনে ৬৪ হাজার ২৮৫। তবে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও যুক্তরাষ্ট্রে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতালি, চীন বা স্পেনের চেয়ে অনেক কম। ইতালিতে যেখানে মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার ১৩৪, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৫৪৬।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই মার্কিন সিনেটে দুই লাখ কোটি (দুই ট্রিলিয়ন) ডলারের বিল পাস হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মহামারিতে চাকরি হারানো কর্মী ও ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে পাস হওয়া হওয়া সবচেয়ে বড় অঙ্কের বিল এটি।
এ মহামারিতে আগামী চার মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়। ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ হতে পারে এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। জুন মাসের পর থেকে ভাইরাসটির প্রকোপ কমতে শুরু করলেও জুলাই মাসের শেষ নাগাদ এতে আক্রান্ত হয়ে অনেকের মৃত্যু হতে থাকবে।
গবেষক দলের নেতৃত্ব দেওয়া ড. ক্রিস্টোফার মুরে বলেছেন, দীর্ঘ সময় ধরে ভাইরাসটির প্রকোপ চললেও এই সময় ধরে সামাজিক দূরত্ব (সোশ্যাল ডিসট্যান্স) মেনে চলার প্রয়োজন নাও পড়তে পারে। তবে সেক্ষেত্রে প্রতিটি সন্দেহভাজন আক্রান্তকে পরীক্ষা এবং নিশ্চিত হওয়া গেলে তাকে কোয়ারেন্টিন করে ফেলতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইতোমধ্যেই সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারির পরবর্তী কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স-এরও করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে তাদের শরীরে এ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। সূত্র: ওয়ার্ল্ড ওমিটার, আল জাজিরা, সিএনএন।