করোনা প্রতিরোধে এগিয়ে এসেছেন সাংসদ মাশরাফিও। করোনা প্রতিরোধে এগিয়ে এসেছেন সাংসদ মাশরাফিও।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত কিছু অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে গত সপ্তাহে নড়াইলে গিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ঢাকায় ফিরেই সপ্তাহখানেক ধরে তিনি ঘরবন্দী। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মাশরাফি নিজে যেমন ঘরবন্দী, নানাভাবে মানুষকে আহ্বান করছেন ঘরে থাকতে।
এ কঠিন পরিস্থিতিতে মাশরাফিকে একসঙ্গে অনেক কিছু ভাবতে হচ্ছে। আর সবার মতো নিজের পরিবার, আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে যেমন ভাবতে হচ্ছে, একই সঙ্গে তিনি একজন খেলোয়াড়ও। সতীর্থ, ক্রীড়াঙ্গনের অন্যান্য মানুষদের নিয়েও চিন্তা করতে হচ্ছে। এই দুই চিন্তার চেয়ে তিনি বেশি ভাবছেন নড়াইলের সাধারণ মানুষকে নিয়ে। তিনি একজন জন প্রতিনিধিও। নড়াইল-২ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ হিসেবে তাঁকে প্রতিনিয়ত ভাবাচ্ছে, এই দুর্যোগ তাঁর এলাকার মানুষ কাটিয়ে উঠবে কীভাবে।
গত পরশু যখন মাশরাফির সঙ্গে কথা হচ্ছিল, মুঠোফোনের এ প্রান্ত থেকেই তাঁর উদ্বেগটা বেশ টের পাওয়া যাচ্ছিল। সাধারণত অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়াটা তাঁর সহজাত গুণ। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই ঝাঁপিয়ে পড়তে পারছেন না। নিয়ম মেনেই সবার মতো তিনিও ঘরে আটকা। ঘরে আটকা থাকলেও বসে নেই। ঢাকা থেকেই নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। এই যেমন নিজস্ব তহবিল থেকে নড়াইলে কর্মহীন ১২০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছেন। এরই মধ্যে নিজস্ব তহবিল থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসক, নার্সদের জন্য ২০০ সুরক্ষার পোশাক পিপিই জোগাড় করেছেন। আরও ৩০০ পিপিই ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আছে তাঁর। এখন পর্যন্ত ৪ টন চাল কেনা হয়েছে। প্রতি পরিবারে ৫ কেজি করে প্রাথমিকভাবে ৩০০ পরিবারকে বিতরণ করা হবে, এভাবে ধীরে ধীরে যত দূর এগিয়ে নেওয়া যায়।
সাংসদ হিসেবে এসব দায়িত্ব তো পালন করছেনই। খেলোয়াড় হিসেবেও ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছেন এ কঠিন সময়ে। ক্রিকেটাররা যে ৩০ লাখ টাকার তহবিল গঠন করেছেন, মাশরাফি সেখানে দিয়েছেন ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। নিজের জায়গা থেকে চেষ্টা করছেন সাধ্যমতো করতে। মাশরাফির উদ্বেগটা এখন মানুষের সচেতনতা নিয়ে। করোনা নিয়ে এত বার্তা, এত প্রচারের পরও এখনো অনেক সচেতন হচ্ছেন না, বুঝতে পারছেন না করোনা ভয়াবহতা।
এটিই ভাবাচ্ছে মাশরাফিকে, ‘ইতালি, স্পেন এত উন্নত দেশ, যাদের স্বাস্থ্যসেবা সব সময়ই সেরা তিনে থেকেছে; তারা কী হিমশিমটা খাচ্ছে করোনা ঠেকাতে! আমাদের বুঝতে হবে এর ভয়াবহতার বিষয়টা। সরকার ছুটি ঘোষণা দিল ঘরে থাকতে। অমনি আমরা পড়িমরি করে দল বেঁধে ছুটলাম গ্রামের বাড়িতে। করোনা ঝুঁকিতে পড়ে গেল হাজার হাজার মানুষ। আমাদের মতো দেশে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতাই হচ্ছে মূল ব্যাপার।