দীর্ঘ ২৫ মাস কারাভোগের পর সরকারের দেওয়া শর্তের ভিত্তিতে মুক্তি পেয়ে গুলশানে ফিরোজা বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার বিকেলে সোয়া ৪টায় হাসপাতাল থেকে বের হন তিনি। এর আগেই খালেদা জিয়ার স্বজনরা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌছেন।
এর আগে খালেদার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে বুধবার বিকালে ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়। এরপর প্রয়োজনীয় অনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আব্দুস সাত্তার জানান, বেলা তিনটা ৫ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি দেওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা এবং বিএনপির মহাসচিব তাকে গ্রহণ করেন।
এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, সরকার যে শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে সেই শর্ত মানতে হবে। শর্ত ভঙ্গ করলে তা বাতিল হয়ে যাবে। সরকার চাইলে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করতে পারে বলেও মতামত দেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী ছিলেন খালেদা জিয়া। তাকে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ কারাগার স্থাপন করে রাখা হয়। গত বছরের এপ্রিল থেকে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুটি শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি জানান, দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে দুই শর্তে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১-এর উপধারা ১ ধারা অনুযায়ী বয়সের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মানবিক কারণে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুক্তিকালীন খালেদা জিয়াকে ঢাকায় তার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।
পরে আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি তার ছোটভাইয়ের জিম্মায় থাকবেন। এ সময় তিনি কেন রাজনীতি করবেন?’