বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের মহামারীতে এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে ইতালিতে। লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। দেশটিতে নতুন করে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে ভাইরাস সংক্রমণের মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২১৫৮ জন।
নতুন করে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৭৩ জন। সবমিলিয়ে ইতালিতে ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮২০। সুস্থ হয়েছেন ২৭৪৯ জন।
এমন পরিস্থিতিতে ইতালির কর্তৃপক্ষ, প্রতিটি নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে সবাইকে আপাতত বাসা থেকে বাইরে যেতে নিষেধ করেছেন অতি প্রয়োজন ছাড়া। এ ছাড়াও প্রশাসন মাইকিং করে সতর্ক করছেন বাসার বাইরে না যেতে। অন্যথায় জেল জরিমানা করা হবে।
কিন্তু মানুষই খুব একটা সচেতন হয়নি। তারা নিয়ম মানছে না। ঘরের বাইরে বের হচ্ছে ব্যাপকভাবে।
কর্তৃপক্ষ যখন লোককে শান্ত থাকতে বলছে তখন তারা সুপারমার্কেটগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে খাদ্য ও স্যানিটারি পণ্য কিনে নিয়ে মজুদ করার জন্য।
কিন্তু লোকে এমন করছে? কেন তারা তাদেরকে যা বলা হয়েছে তা করছে না? তারা কি মূর্খ নির্বোধ? নাকি আন্তর্গতভাবেই বিদ্রোহী? এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিলো সার্ডিনিয়ার ক্যাগিলিয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেনাটো ট্রোফফাকে।
অধ্যাপক উত্তরে বললেন, ‘গণঝুঁকি সম্পর্কে লোকের ধারণা একটু জটিল হয়। আমাদের ব্যক্তিগত সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং পরিবেশ আমরা কিভাবে কোনো ঝুঁকিকে অনুধাবন করব তার ওপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। আপনি কি সরকারকে বিশ্বাস করেন? আপনার চারপাশের মানুষরা কি উদ্বিগ্ন? এসব বিষয়ও এক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। লোকে সাধারণত তিনটি গাইডলাইনের ওপর ভিত্তি করে ঝুঁকির মূল্যায়ন করে। কোনো একটি ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা, সেটি নিয়ন্ত্রণে আমাদের সক্ষমতা এবং এর ফলাফল কতটা বিপর্যয়কর হতে পারে। আমরা সাধারণত সংবাদ ও তথ্য-উপাত্তের কেন্দ্রীয় সূত্রসমূহ অথবা আমাদের পরিবেশ, যেমন আশপাশের লোকজনের আচরণের ওপর ভিত্তি করে ঝুঁকির মূল্যায়ন করি।
আপনি যদি সত্যিই আগ্রহী হন এবং বিষয়টিতে দক্ষ হন তাহলে আপনি প্রথম পদ্ধতিতে ঝুঁকির মূল্যায়ন করবেন। আর নয়তো আপনি আশপাশের লোকজনের আচরণ নকল করবেন এবং তাদের মতোই প্রতিক্রিয়া দেখাবেন। যখন তথ্য প্রতিনিয়ত বদলে যেতে থাকে তখন এমনটা বেশি ঘটে।