কর্পোরেট আড্ডা
এন্টারপ্রেনার বাংলাদেশঃ আমাদের দেশে আমরা অনেক সমস্যা নিয়ে বসবাস করছি। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নাই। আবার অনেকগুলো অপরচুনিটিইও আমাদের সামনে আছে। সমন্বয় করে কি ভাবে এগুনো যায় বলুন?
মো. খোরশেদ আলম : এখন অন্তরভুক্তিমুলক অর্থনীতিতে এগিয়ে আসতে হবে। আপনি যে কনসেপটার কথা বললেন, সেটাও সত্যিই এপ্রিশিয়েবল। ছোট ছোট উদ্যোক্তা তৈরির জন্য কমিনিটির মতো তৈরি করা। সমবায়ের মতো তৈরি করা। কমবাইন্ড ইনভেস্টমেন্ট হবে এবং কিছু লোক সার্ভিস দেবে। কিছু ইনভেস্টর হবে। কিছু হবে ইকুইটি পার্টনার। সো কনসেপ্ট ইজ গুড। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য লিডারশিপ দরকার। একটা পরিবার বা একটা গ্রাম একটা মডেল হতে পারে। একটা গ্রামকে যখন একটা আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন, তখন অন্যরা , এই গ্রামটাকে ফলো করতে পারবে। ওখানে চাষবাস থেকে শুরু করে সব কিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়া আসবে। আধুনিকায়নের জন্য কৃষি অফিসাররাও ওতপ্রোত ভাবে জড়িত আছেন। এগুলোর জন্য আসলে একটা ব্রিজিং দরকার। ডিমান্ড সাইড সাপ্লাই সাইডের মধ্যে যদি একটা ব্রিজিং করতে পারেন। যারা তারা কিন্তু আসলে মূল্যটা পাচ্ছে না। আপনারা গ্রামের প্রান্তিক যে লোকটার কথা বলছেন, মহিলার কথা বলছেন, সে একটা শতরঞ্জি বানালো, সে একটা কাঁথা বানালো, তার যদি রিয়াল ভেল্যু শ্রমের মূল্য যে প্রাইজে বিক্রি করছে তার চেয়ে অনেক বেশি। সে যে প্রাইজে বিক্রি করছে, আলটিমেট যারা ইউজার, যারা বায়ার তারা কিন্তু অনেক বেশি দামেই কিনছেন, কিন্তু যারা উদ্যোক্তা সে কিন্তু দামটা পাচ্ছে না। এই জায়গাটাতে যদি প্লাটফর্মটা ওইভাবে সাজানো যায় যে আপনি, মেনুফ্যাকচারিংয়ে আপনি যদি ছোট ছোট হাব করেন, সেটার জন্য একটা মার্কেট ক্রিয়েট করতে হবে । সেটার জন্য আপনার সাপ্লাই সাইডের একটা লিংকেজ করে দিতে হবে।
এন্টারপ্রেনার বাংলাদেশঃ
আমরা যেটা নিয়ে কাজ করছি বাংলাদেশ এসএমই ক্লাব। আমরা সারা বাংলাদেশের এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদেরকে একটা ক্লাবের মধ্যে নিয়ে আসছি। যাতে করে তারা নিজেদের মধ্যে আদান প্রদান করতে পারে। যেমন ধরেন দিনাজপুরে চাল হয়। তাহলে তারা নিজেরাই ঠিক করে নিলো যে তোমরা চাল দাও আমি বাজারজাত করে দিচ্ছি।
আমরা একটা বিষয় নিয়ে ভাবছি,এবং ইমপ্লিমেন্ট করতে চাচ্ছি।
ধরেন একজন মুড়ি বানাচ্ছে এটা উৎপাদন। ধরেন কোথাও মুড়ীর দোকানদারকে কাঠ সাপ্লাই দিচ্ছে একজন সে কিন্তু ব্যবসা করছে। তারমানে একটা ইন্টারলিংক তৈরি হচ্ছে। কাঠটা না পেলে কিন্তু মুড়িটা ভাজতে পারছে না।
তাহলে কিন্তু মধ্যসত্বভোগীর জায়গাটা আর থাকছে না। নিজেরাই ব্যবস্থা করতে পারছে।
আপনি যে প্রতিবন্ধকার কথা বললেন এগুলো আপনার কাছ থেকে আরো পরিস্কার হলাম। আপনি তো দীর্ঘদিন কাজ করেন। এ কারণে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হলো।
মো. খোরশেদ আলম : আসলে আমি তো দীর্ঘদিন ধরে এসএমই নিয়েই কাজ করি। আমরা সব সময় চাকুরি খুজি, আমাদের ব্লাডের মধ্যে ঢুকে গেছে চাকর হওয়ার প্রবণতা। উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা কেউ করে না। যারা শিক্ষিত তারা কিন্তু এগিয়ে আসতে হবে। এটা একটা সুখের সংবাদ যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে এন্টারপ্রেনার ডেভলপমেন্টের বিভাগ চালু করেছে। ডেফোডিল ইউনিভার্সিটিও শুরু করছে। কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি শুরু করছে। এখন আপনি যদি ছোট বেলা থেকেই ব্লাডের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন আপনি উদ্যোক্তা হবেন তাহলে কিন্তু আপনি উদ্যোক্তা হবার চিন্তা করবেন। গার্ডিয়ান লেবেলেও চিন্তা করবে যে ছেলেটা এই সাবজেস্ট নিয়ে পড়ছে তাকে পুঁজি দিয়ে কিভাবে তৈরি করা যায়। আমরা যখন চাকরি পাচ্ছি না তখন একটা ব্যবসা করতে যাচ্ছি। আমি ব্যবসাতে ঢোকার পরে চাকরির জন্য চেষ্টা করি। যেদিন আমি চাকরিটা পেয়ে যাবো সেদিন ব্যবসাটা বন্ধ। যার ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে যাওয়ার হারটা অনেক বেশি।